ঢাকা, শনিবার   ১২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আল্লাহর বিরাটত্ব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৯, ৫ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৮:৩৪, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

স্রষ্টা স্বয়ম্ভূ। তার সৃষ্টির সবকিছু কার্যকরণ সূত্রে গাঁথা। সব কিছুই নির্দিষ্ট নিয়মের অধীন। কিন্তু তিনি নিজেই নিজের কারণ। মানুষের নিজ বুদ্ধি এবং মনন নিয়ে একটা অহংকার আছে। কিন্তু সে বুদ্ধি এবং মননের একটা সীমা আছে। আল্লাহ সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে পরিব্যাপ্ত।

মানুষের পক্ষে তার বিরাটত্বের পরিমাপ করা সম্ভব নয়। এমনকি তার বিরাটত্বের স্বরূপ কি তাও নিজ বুদ্ধিতে ধারণ করা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনিভাবে আল্লাহ কত ছোট, কত ক্ষুদ্র সে পরিমাপও মানুষ নিজ বুদ্ধিতে করতে পারে না।

আল্লাহর বিরাটত্বকে উপলব্ধি করা মানবিক ধী-শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। আলোর গতি হচ্ছে সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল। এই হিসেবে আলো ঘণ্টায় যায় প্রায় ৬৬৯.৬ মিলিয়ন মাইল।

এক দিনে অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় আলো যায় প্রায় ১৬.০৭ বিলিয়ন মাইল। এক বছর অর্থাৎ ৩৬৫ দিনে আলো কত দূর যায়? ৫.৮৬ ট্রিলিয়ন মাইলের কিছু বেশি। এই হচ্ছে এক আলোক বর্ষ। এই দূরত্ব মানুষ তার বোধগম্যতায় ধারণ করতে পারে না।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এমনও গ্রহ এবং নক্ষত্রপুঞ্জের খবর পাওয়া গেছে যা থেকে আলো এসে পৌঁছাতে সময় লাগবে দেড় থেকে দুই লাখ আলোক বর্ষ। বহু নক্ষত্র আছে যা থেকে আলো এসে পৌঁছায়নি।

কখন পৌঁছাবে তাও একমাত্র তারই জানা আছে- যিনি আমাদের বোধগম্যতার বাইরে। এই তো গেল বিরটাত্বের কথা। ক্ষুদ্রত্বেরও তার কোন পরিমাপ আমাদের জানা নেই। আমরা সবে ইলেক্ট্রন এবং কোয়ার্ক পর্যন্ত পৌঁছেছি। এর বাইরেও তার ক্ষুদ্রত্ব আছে।

সুতরাং এই অস্তিত্বকে আমরা তার বিরাটত্ব কিংবা ক্ষুদ্রত্ব কোনটা দিয়েই হৃদয়ঙ্গম করতে পারি না। এজন্যই আল্লামা ইকবাল বলেছেন, ‘সিতারোঁ কি আগে জাঁহা আউর ভি হ্যায়’ (দূর নক্ষত্রের জগত পেরিয়েও অনেক ভূমণ্ডল রয়েছে)।

কম্বল মুড়ি দিয়ে সূর্যের আলোতে বসে থাকলে ভেতরটা অন্ধকার লাগবে। কিন্তু তাই বলে সূর্যটা মিথ্যা হয়ে যাবে না।

অন্যদিকে মায়ের পেটে যে শিশু আছে তার যদি কথা বলার ক্ষমতা থাকত আর তাকে যদি প্রশ্ন করা হতো তার মায়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে তাহলে সে শিশুর জবাব কি হতো? সে তো একটা অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রয়েছে। সে প্রকোষ্ঠটা কি সে তাও জানে না।

এ অবস্থায় সে তার মায়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে সঠিক কোন ধারণা দিতে পারবে না। সে কিন্তু বলতে পারে যাকে দেখি না সে নেই। মানুষের অবস্থাও কিন্তু অনুরূপ। সে আছে খোদার মধ্যে।

নিজেকে সে দেখছে মায়ের গর্ভের মতই একটা বড় প্রকোষ্ঠ- যা কিনা আমাদের এই পৃথিবী। যার মধ্যে সে অবস্থান করছে তার অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রমাণ সে দেবে কেমন করে। ‍অজ্ঞানতা থেকে একথা বলতে পারি যার মধ্যে আছি তিনি নেই। সেটা বললে নিজের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হয়।

লেখাটি অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশীদ- এর ‘সংলাপ সমগ্র’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া।

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি