ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ঈদের জামাতে করোনা থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৫, ২৫ মে ২০২০

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। এর ভেতরেও সুরক্ষা বজায় রেখে বাংলাদেশের মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব জামাতে অংশ নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে চোখের পানি ফেলে কোভিড-১৯ থেকে পুরো বিশ্ববাসীকে রক্ষায় বিশেষ দোয়া চেয়েছে।

এবার ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাঁয়ের পরিবর্তে বায়তুল মোকাররম মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, সকাল ১০টায় চতুর্থ জামাত এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রতিবারই নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনা থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে চতুর্থ জামাত শেষে পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম মোনাজাতে বলেন, ‘পুরো বিশ্ব আজ অবরুদ্ধ হয়ে আছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। হে আল্লাহ এই মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের রক্ষা করুন, পুরো বিশ্ববাসীকে রক্ষা করুন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের সবাইকে শাহদাতারের মর্যাদা দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’

প্রায় প্রতিটি জামাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন। মসজিদের প্রবেশ মুখে লাইন ধরে যেতে হয়েছে মুসল্লিদের। জীবানুমুক্ত করণ চেম্বারের ভেতরে দিয়ে যেতে হয়েছে সবাইকে। মাস্ক পড়া ছাড়া কাউকেই মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। 

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।  দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী। তৃতীয় জামাতের ইমামতি করেন পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। চতুর্থ জামাতে ইমামতি করেন পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান।

রাজধানীর  মিরপুর, কল্যাণপুর, তেজগাঁও, কাকরাইল, পল্টনসহ অন্যান্য এলাকার মসজিদগুলোতেও দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ অংশগ্রহণ করতে। তবে যারা মাস্ক না পরে এসেছিলেন তাদের মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কোনও কোনও মসজিদের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের দেওয়া হয়েছে মাস্ক।  নামাজের কাতার হয়েছে ফাঁকা ফাঁকা দাঁড়িয়ে।  মসজিদের প্রবেশ মুখেই  স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছে মুসল্লিদের।

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। প্রথম দফা নামাজ শেষে খুতবায় খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বাংলাদেশকে করোনার দুর্যোগ থেকে মুক্তি দিতে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন। 

দোয়ায় তিনি বলেন, ‘যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, ফরিয়াদ জানাই তাদের আপনি জান্নাতে স্থান দিন। যারা আক্রান্ত হয়ে হসপিটালে, কোয়ারেনটাইনে, আইসোলেশনে আছেন, তাদের নিরাময়ের ব্যবস্থা করে দিন। যারা দেশের জনগণের সেবা করে যাচ্ছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ-র‌্যাব, সেনাবাহিনীর ভাইয়েরা, সাংবাদিক ভাইয়েরা, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা সবার ওপর আপনি রহমত নাজিল করুন।’

এভাবে সারাদেশেই সুরক্ষা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল ফিতরের জামাত। আর এসব জামাতে নামাজ শেষে মুসুল্লিদের সবারই একটাই আকুতি দিল, ‘হে আল্লাহ করোনাভাইরাস থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন, মহামারি করোনাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে তুলে নিন। অসুস্থদেরকে সুস্থ করে দিন।’

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি