যেমন হওয়া উচিত কোরবানির পশু
প্রকাশিত : ১৬:৩১, ২৪ জুলাই ২০২০
ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি হলো ত্যাগ স্বীকার করা। এই ত্যাগ হলো মাল ও মনের। একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই দিতে হবে কোরবানি। তবে এক্ষেত্রে কৃপণতা আল্লাহর পছন্দ নয়। যার যেরকম সম্পদ সেই অনুসারেই ত্যাগের মাধ্যম হওয়া উচিত। অর্থাৎ কোরবানির পশুটি আপনার সম্পদের নিরিক্ষেই বাছাই করা উচিত।
কোরবানির পশু মোটাতাজা, হৃষ্টপুষ্ট ও নিখুঁত হওয়া উত্তম। তবে মনে রাখতে হবে, সব পশু দিয়ে যেমন কোরবানি হয় না, তেমনি সব বয়সের পশু দিয়েও কোরবানি হয় না। এ ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। গৃহপালিত উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এগুলোর নর-মাদি উভয়টি দ্বারাই কোরবানি করা জায়েয। এসব পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন- হরিণ, বন্য গরু-গয়াল ইত্যাদি দ্বারা কোরবানি করা জায়েয নয়।
কোরবানির পশু বাছাই করার কিছু নিয়মরীতি রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করা প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির কর্তব্য। আপনি অর্থ ব্যয় করে পশু কিনে কোরবানি দিবেন, তা অবশ্যই সহি-শুদ্ধভাবে হওয়া উচিত। কোরবানির পশু কি নিয়মে বাছাই করবেন তা জেনে নিয়েই তারপর পশুর হাটে যাওয়া উচিত। এবার জেনে নিন পশু বাছাইর নিয়ম-
পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে না
কোরবানির পশু হতে হবে দোষত্রুটিমুক্ত। হাদিসে এসেছে, ‘চার ধরনের পশু, যা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধ—যার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্ত—যার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গু—যার পঙ্গুত্ব
স্পষ্ট ও আহত-যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৪৪)
উপরোক্ত হাদিসের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যায় জানা যায়,
১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা
২. শ্রবণশক্তি না থাকা
৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া
৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম
৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা
৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা
৭. কানের বেশির ভাগ কাটা
৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া
৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া
১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা
১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া
১২. ছাগলের দুটি দুধের বানের যেকোনো একটি কাটা
১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের বানের মধ্যে যেকোনো দুটি কাটা।
এই ত্রুটিগুলো রয়েছে যে পশুর তা দিয়ে কোরবানি দেওয়া যাবে না। উত্তম হচ্ছে ত্রুটিমুক্ত পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া, ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারা কোরবানি দেওয়া অনুচিত।
কোন পশুর বয়স কত হতে হবে
১. উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে
২. গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে
৩. ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। এর চেয়ে এক দিন কম হলেও কোরবানি হবে না।
তবে ৬ মাসোর্ধ্ব ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয় কিন্তু হৃষ্টপুষ্ট, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয়। তাহলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েয। ছাগলের বয়স ১ বছরের কম
হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কোরবানি জায়েয হবে না। (মুসলিম, হাদিস : ১৩১৮)
এএইচ/এমবি