ফজরের নামাজের দশ উপকারিতা
প্রকাশিত : ১৪:২০, ৮ আগস্ট ২০২০
নামাজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে ফজরের নামাজ পড়ার ১০ উপকার বর্ণনা করা হলো—
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো...। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৯)
- ফজরের সলাত আদায়কারী, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বরকতের দু’আ লাভ করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
- বিখ্যাত তাবেয়ি আবু বকর বিন উমারাহ তাঁর পিতা রুআয়বাহ থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের আগের এবং সূর্যাস্তের আগের অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামাজ আদায় করে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩২২)
- কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ: বিখ্যাত সাহাবি আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের অন্ধকারে মসজিদগুলোতে যাতায়াতকারীদের কিয়ামতের দিনের পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ দাও। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭৮১)
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭)
- রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭)
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার সব কিছুর চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭৩)
- ফজরের সময় ফেরেশতাদের পালাবদল হয়। আর এ সময় বান্দা যা কিছু করে ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে তা পেশ করে। এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বিষয়টি চমৎকারভাবে তুলে ধরে বলেছেন, ‘ফেরেশতারা পালাবদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; একদল দিনে, একদল রাতে। আসর ও ফজরের সালাতে উভয় দল একত্র হন। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যান। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে? অথচ তিনি তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। জবাবে তাঁরা বলেন, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি, আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনো তারা নামাজরত ছিলেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫)
- জারির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একবার আমরা নবী করিম (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ওই চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার আগের সালাত আদায় করতে পারলে তোমরা তা-ই করবে। ’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৩৯)
- ফজর নামাজ আদায়ের জাগতিক উপকারের কথা আল্লাহর রাসুল (সা.) এভাবে বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পশ্চাদংশে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঁট খুলে যায়, অজু করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়, অতঃপর সালাত আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয় উত্ফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে ওঠে কলুষ কালিমা ও আলস্য নিয়ে।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৪২)
এসএ/