রমজান : দেহ-মন দূষণমুক্ত করুন
প্রকাশিত : ১০:৩৭, ৩ মার্চ ২০২৪ | আপডেট: ১৬:৪৭, ৯ মার্চ ২০২৪
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তার ডাকে সাড়া দিয়ে জাতি মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
ভাবনার সামাজিকায়ন অসম্ভবকে কীভাবে সম্ভব করে, আমাদের স্বাধীনতা তার প্রমাণ। সবাই যখন একই ভাবনার অনুরণনে অনুরণিত হয় তখন পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতা থেকে সহযোগিতায় রূপান্তরিত হয় এবং কল্যাণ ভাবনা ভালো ভাবনার বাস্তবায়নে স্রষ্টার সাহায্য আসতে শুরু করে এবং ভাবনা স্বপ্ন বাস্তব রূপ নেয়।
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে রমজান শুরু হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে রমজান স্রষ্টা-সচেতনতার মাস। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে রমজান দেহকে সব ধরনের দূষণমুক্ত করার মাস। শারীরিক মানসিক সামাজিক আত্মিক যতরকম দূষণ আছে, যতরকম টক্সিন আছে, সমস্ত টক্সিন থেকে মুক্ত থাকার মাস হচ্ছে রমজান।
৩০ দিন সাদা চিনি জাতীয় খাবার বর্জন করলে নিজেই অনুভব করবেন সুস্থতা। আসলে সাদা চিনি একে ইংরেজিতে বলাই হয় হোয়াইট পয়জন। এই সাদা বিষ স্থূলতা হৃদরোগ ক্যান্সারের প্রধান কারণ। অতএব শরবত সিরাপ মিষ্টি অর্থাৎ সাদা চিনিজাত যত খাবার রয়েছে এবারে পুরোপুরি বর্জন করুন।
রোজার সময় ফল ডাবের পানি টকদই লেবুপানি শাকসবজি দুধ সয়াদুধ মাছ এবং লাল চালের ভাত বা লাল আটার রুটি খাবার হিসেবে উত্তম।
সেহরিতে যত হালকা খাবেন তত সারাদিন আপনি প্রাণবন্ত থাকবেন তত শরীরটা হালকা থাকবে। সেহরিতে অল্প সবজি অল্প ভাত বা রুটি একটু ফল একটু দই আপনি খেতে পারেন।
রসুলুল্লাহ (স.) যে এত সুস্থ ছিলেন প্রাণবন্ত ছিলেন তার একটি কারণ হচ্ছে ইফতারও তিনি হালকা করতেন, সেহরিও হালকা করতেন।
রমজান অফুরন্ত নেকির মাস। রমজান এলেই রসুলুল্লাহ (স.) দানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতেন। কারণ সাধারণ মাসের চেয়ে রমজান মাসে দান বা সৎ কাজের ভালো কাজের সওয়াব ৭০ গুণ বেশি। সেটা যদি সঙ্ঘবদ্ধ দান হয় বা সঙ্ঘবদ্ধ সৎকাজ হয় তাহলে এটার গুণ এটা আরও ৭০ গুণ বেশি। ৭০ পূরণ ৭০ গুণ বেশি সওয়াব হচ্ছে রমজান মাসে দান এবং সৎকর্মের সওয়াব। রমজানে মানুষের দুর্দশা মোচনে অভাবীর অভাব মোচনে কাজ করা ১০ বছর এতেকাফের চেয়েও বেশি সওয়াবের।
রমজান মাসের কোনো সময় অপচয় না করে পুরো সময় কোরআনের জ্ঞানচর্চা এবং সৎকর্মে মানুষের দুর্দশা মোচনের করা কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা সবচেয়ে ভালো।
আসলে রমজান মাসের যে এত গুরুত্ব এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই মাসে আল্লাহতায়ালা মানুষের জীবনকে সুন্দর করার জীবনকে কল্যাণময় করার জীবনকে সফল করার জীবনকে সুখী করার যে ম্যানুয়াল আল কোরআন, এই ম্যানুয়ালের অবতীর্ণ করেন। অতএব যখনই সুযোগ পান কোরআনের গভীরে ডোবার চেষ্টা করুন। যখনই সুযোগ পান কোরআনের গভীরে হারিয়ে যান। তাহলে আপনার যতরকম মনোদৈহিক মনোজাগতিক মনোসামাজিক ও আত্মিক ব্যাধি বিকার বিভ্রান্তি বা বিকৃতি রয়েছে এ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
সূরা বনি ইসরাইলের ৮২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, বিশ্বাসীদের জন্যে কোরআন শেফা এবং রহমতস্বরূপ।
আমরা আগেই বলেছি যে, রমজান কোরআন চর্চার মাস আর কোরআনের গভীরে প্রবেশ করার জন্যে প্রয়োজন নবী করিম (স.) এর জীবন সম্পর্কে জানা এবং হাদীসের জ্ঞান। আর বাংলা ভাষায় হাদীসের জ্ঞানকে সহজভাবে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে হাদীস শরীফ বাংলা মর্মবাণী গ্রন্থ (hadith.qm.org.bd)।
এএইচ