হজযাত্রীদের ভোগান্তি শেষ, সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন হচ্ছে ঢাকায়
প্রকাশিত : ১৬:২৪, ৮ জুলাই ২০১৯
হজের উদ্দেশ্যে দেশের হজযাত্রীরা ইতিমধ্যে সৌদি আরব যাওয়া শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে হজযাত্রীদের নিয়ে কয়েকটি ফ্লাইটও সৌদি আরব গমন করেছে। এ বছর কিছু হজ ফ্লাইটের জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু নেটওয়ার্ক জটিলতার কারণে প্রথম ও দ্বিতীয় হজফ্লাইটের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। একটি গ্লোবাল ডিজিটাল সমস্যার কারণে এটি সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ।
তবে বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) দিনগত রাত থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পূর্ণোদ্যমে শুরু হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানান, মক্কার রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টায় বিমানের বিজি-৩০০৩ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দশে ঢাকা ছেড়েছে। এতে ৪১৯ জন হজযাত্রী রয়েছেন। তাদের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঢাকায় সম্পন্ন হয়েছে।
এখন থেকে নির্ধারিত ফ্লাইট এর হজযাত্রীরা এ সুবিধা পাবেন। কারিগরি জটিলতার কারণে এ কার্যক্রম খানিকটা বিলম্বিত হলেও হজ ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গিয়েছে এবং হজযাত্রীরা জেদ্দায় দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে মক্কা শরীফে পৌঁছেছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হজ মৌসুমে দু’মাসব্যাপী ৩০৪টি ডেডিকেটেড ও ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান। ৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রি-হজে মোট ১৮৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড ১৫৭ এবং শিডিউল ৩২)। পোস্ট হজে ১১৫টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড ৮৬ ও শিডিউল ২৯)। তার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৯টি ও সিলেট থেকে ৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
এছাড়াও এ বছর প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে সৌদি আরব যাবেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন সাত হাজার ১৯৮ জন। হজযাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা এবং ঢাকা-মদিনা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের চারটি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটের হজ-যাত্রীরা জেদ্দায় যাবেন। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতিটি ফ্লাইটের উড্ডয়ন কাল হবে আনুমানিক ৭ ঘন্টা।
উল্লেখ্য, মাত্র কয়েক বছর আগেও প্রতি হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের চরম দুর্ভোগের খবরে দেশের সংবাদপত্রগুলো ভারী হয়ে উঠত। তাতে হজ এজেন্সিগুলোর দৌরাত্ম্য, স্থানীয় পর্যায়ের দালালদের প্রতারণা, সরকারের অব্যবস্থাপনা—অনেক কিছুই উঠে আসত। এতে সরকার ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জরুরি নির্দেশনা দেন এবং সরকার সমস্যা মোকাবেলায় নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ দায়িত্ব লাভের পর হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বিশেষ মনোযোগ দেন। তিনি সৌদি আরব সফরে যান এবং বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজীকরণসহ বেশ কিছু বিষয়ে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এসব উদ্যোগ হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সর্বশেষ সাফল্য ‘প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন’ চালু করা।
এসএ/