আশুরার ফজিলত
প্রকাশিত : ১৪:৫০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
আগামীকাল মহররম মাসের ১০ তারিখ। হিজরি সনের প্রথম মাস হলো মহররম। আরবি শব্দ আশির বা আশ্রুন শব্দ থেকে ‘আশুরা’ শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ হচ্ছে দশম। তাই মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়।
১০ মহররমের সঙ্গে অসংখ্য বরকতময় ঘটনা জড়িত। প্রিয় পয়গম্বদের প্রতি আল্লাহতায়ালা এই দিনটিতে অনেক অনুগ্রহ প্রদান করেছেন। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)র কারবালার বেদনাবিধুর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে ১০ই মহররমের সঙ্গে।
মহরররম, রজব, জিলকদ ও জিলহজ এ চারটি মাসকে আল্লাহপাক পরম সম্মানিত ও পবিত্র বলে পবিত্র আল কোরআনে ঘোষণা করেছেন। নবীজি (স.)-ও এসব মাসকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) হিজরতের পর যখন মদিনায় আসেন তখন দেখতে পেলেন যে, ইহুদিরা মহররমের ১০ তারিখে রোজা রেখে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে আশুরা পালন করছে। কারণ হিসেবে জানতে পারলেন, তারা হযরত মুসা (আ.)-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য রোজা রাখছে।
হুজুরে পাক (সা.) উপলব্ধি করলেন যে, হযরত মুসা (আ.)-এর প্রতি আমাদেরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তিনি ওই দিনই রোজা রাখলেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখতে বললেন। (আবু দাউদ : ২৪৩৬)
অন্য এক হাদিসে আসছে, একদিন রোজা রাখলে ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায় বিধায় নবী করীম (সা.) পরবর্তীতে দুই দিন রোজা রাখতেন এবং সাহাবীদেরকে রাখতে বলতেন।
নবী করিম (সা.) আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি আশুরার দিন রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী বছরের সব গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। (মুসলিম শরিফ : ২৬১৫)
হাদিস শরিফে আরও উল্লেখ রয়েছে, যে ব্যক্তি আশুরার রাতে খাঁটি অন্তরে নফল নামাজ আদায় করবে, আল্লাহপাক তার সমুদয় গুনাহ মাফ এবং অশেষ রহমত বর্ষণ করবেন। দুনিয়ার যাবতীয় বিপদ-আপদ, রোগ-শোক এবং দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত রাখবেন। রুজি-রোজগার ও আয় উন্নতিতে বরকত দান করবেন।
৬১ হিজরির ১০ মহররম ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) দামেস্কের অধিপতি দুরাচার ইয়াজিদের সেনাবাহিনীর হাতে সপরিবারে শাহাদাতবরণ করলে এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে শোকের দিন হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত বরণে এদিনের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। ইমাম হোসাইন ছিলেন ত্যাগ ও আল্লাহপ্রেমের প্রতীক আর ইয়াজিদ ছিল লেবাস ও ভোগের পুজারী। বর্তমানে মুসলিম জাহানের আল্লাহর বান্দারা ত্যাগ বাদ দিয়ে ভোগকে বেছে নিয়েছে। কি নির্মম পরিহাস!
তাই আসুন এই ভোগবাদীকে বর্জন করে মহররমের তাৎপর্য অনুধাবন করে আগামীকাল রোজা রাখি এবং পরের দিনও রাখার চেষ্টা করি। এর বিনিময়ে আল্লাহর নিকট থেকে অশেষ পূণ্য হাসিল করা সম্ভব হবে।
এএইচ/