‘ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৯৫০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন’
প্রকাশিত : ০৯:৪৩, ৬ মার্চ ২০১৮
১০ লাখ রোহিঙ্গা ও তিন লাখ স্থানীয় মানুষকে বাসস্থান, শিক্ষা সহায়তা ও অন্যান্য ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য জাতিসংঘের প্রায় ৯৫০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এ বিষয়ে তারা একটি জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান তৈরি করছে, যা এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোহিঙ্গাবিষয়ক ন্যাশনাল টাস্কফোর্সের বৈঠকে জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান সরকারের কাছে ব্যাখ্যা করেন।
জাতিসংঘ ও রোহিঙ্গাশরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম বলেন, আজ জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের বিভিন্ন বিষয়গুলি আমাদের জানিয়েছেন। তাদের প্রাক্কলন অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৯৫০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
তিনি জানান, কক্সবাজারে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আছে এবং এদের উপস্থিতির কারণে প্রায় তিন লাখ স্থানীয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা হচ্ছে। এছাড়া পরিবেশসহ অন্যান্য অনেক কিছুর ক্ষতি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ছাড়াও বন্যা, বৃষ্টি বা অন্য ঝুঁকিসহ এবং স্থানীয় জনগণকে সহায়তা দেওয়ার জন্য মোট ১২টি খাতে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে।
এর আগে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে নয় লাখ রোহিঙ্গা ও তিন লাখ স্থানীয় জনগণকে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ বলেছিল প্রায় ৪৩৪ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন। এবারের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে খাতভিত্তিক অর্থাৎ খাদ্য, বাসস্থান ইত্যাদি খাত অনুযায়ী বরাদ্দ হবে যেটি বর্তমান জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ছিল না।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, এবারের প্ল্যানটি অনেক বেশি সামগ্রিক এবং এখানে ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। কি ধরনের ঝুঁকি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গারা কিভাবে থাকবে বা পাহাড় ধস সংক্রান্ত ঝুঁকি এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি এবং আমরা আশা করছি বাংলাদেশের মতামতকে সংযুক্ত করে এটি জেনেভাতে ঘোষণা দেওয়া হবে।
এদিকে ‘রাখাইনে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে’ নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ বিভিন্নজনের এমন দাবির প্রেক্ষিতে গণহত্যাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত আদামা দিয়েং আগামী ৭ মার্চ এক সপ্তাহের জন্য ঢাকায় আসছেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়াও তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাখাইনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।
এসএইচ/
আরও পড়ুন