রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সুচির প্রতি আসিয়ান নেতাদের আহবান
প্রকাশিত : ২২:৩২, ১৮ মার্চ ২০১৮
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জোটের নেতৃত্ববৃন্দ। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে আশিয়ানভুক্ত দেশ সমূহের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।
রবিবার সিডনিতে অনুষ্ঠিত আশিয়ান গ্রুপের তিনদিনের এ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুটি আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল। সম্মেলনে আসিয়ান নেতৃবৃন্দদের চাপের মুখে পড়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনের কারণে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর এই বর্বর হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনায় বরাবরই নীরব থেকেছেন শান্তিতে বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচি। ফলে বিশ্বজুড়ে সুচি সমালোচনা ও নিন্দার মুখোমুখি হচ্ছেন।
সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি কোনো বক্তব্যও দেননি। বরং সেনাবাহিনীর সাফাই গেয়ে বরাবরই বলে এসেছেন রাখাইনে কোনো হত্যাকাণ্ড বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। রোহিঙ্গা সংকট সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। ফলে অস্ট্রেলিয়া ও আসিয়ানের এবারের যৌথ সম্মেলনে এই বিষয়টিকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়েছে।
এ ছাড়া আসিয়ান নেতৃবৃন্দ ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, মৌলবাদ ও বিচ্ছিন্নতবাদ মোকাবেলায় আরো নিবিড়ভাবে কাজ করতেও সম্মত হয়েছেন।
তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ‘আমাদের জনগণের মানবাধিকার রক্ষা’ বিষয়ক সমাধানের কথা উল্লেখ করা হলেও শেষ পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের অত্যাচার নির্যাতনের নিন্দা জানাতে আসিয়ান ব্যর্থ হয়েছে।
তিনদিনের এ সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম ট্রার্নবুল বলেছেন, আজ আমরা বিবেচনার সঙ্গেই রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি আলোচনা করেছি। অং সান সুচি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন। এটি খুবই জটিল সমস্যা। এ সংকটের অবসান চান সবাই।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লী হাইচেন লুং বলেন, ``আশিয়ানভুক্ত সকল দেশের জন্যই এটি একটি উদ্বেগের বিষয়``। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নতুন হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এ দিকে সম্মেলন চলাকালে সিডনিতে মূলত মানবাধিকার ইস্যুতে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দমনপীড়নের অভিযোগে অং সান সুচি, কম্বোডিয়ার হুস সেন ও ভিয়েতনামের নগুয়েন জুয়ান পুকের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে।
১৯৬৭ সালে ১০ দেশ নিয়ে গঠিত আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো ব্রনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। ১৯৭৪ সাল থেকে জোটটির আলোচনা সহযোগী হিসেবে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
কেআই/টিকে
আরও পড়ুন