রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারে সহায়তা করবে বাংলাদেশ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:৩৮, ৮ অক্টোবর ২০২০
রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সুবিধার্থে কোনো সহায়তা লাগলে তা করতে রাজি বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডের হেগের পরিবর্তে এ অঞ্চলের কোনো দেশে শুনানি করার আবেদন করেছে আইনজীবী প্যানেল। গণমাধ্যমে খবরটি আসলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ কোনো প্রস্তাব পায়নি বলে জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রাখাইনের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে রোহিঙ্গাদের শেষ ভরসা এখন আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি।
আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার আদালত আইসিজেতে গাম্বিয়ার করা মামলায় প্রথমে অস্বীকার করলেও কাঠগড়ায় হাজির হতে বাধ্য হন অং সাং সূচি। আদালত অন্তবর্তী আদেশে গণহত্যা বন্ধ করার নির্দেশনা দিলেও মানেনি মিয়ানমার। গেল দুই মাসে ৫৬ জনকে হত্যার খবর এসেছে।
বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শুধু দূরত্বের কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের শুনানীতে অংশ নেয়া কঠিন। তাই অন্য কোন দেশে আদালত বাসানোর আবেদন করেছে তিনটি ভিকটিম গ্রুপের আইনজীবীরা।
আর্ন্তজাতিক সর্ম্পক বিশ্লেষক সাহেব এনাম খান বলেন, এটা বাস্তবসম্মত না এই কারণে যে আন্তর্জাতিক আদালতের নিজস্ব গতি-প্রকৃতি আছে, এখানে আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাপার আছে এটা ডমেস্টিক আইন নয়। সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে, দালিলিক প্রমাণ হিসেবে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার মানে এটা নয় যে, আন্তর্জাতিক আদালত সরাসরি এটাকে কয়েকজনের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দিয়ে দিবেন।
আইসিসির ধারণা বিবরণীতে বাংলাদেশকে বোঝানো হয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে, বিচারের বড় মাইলফলক হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেন, সব জাজদের সম্মত হতে হবে, যেই দেশে বসবে সেই দেশের সম্মতির ব্যাপার আছে এবং এটা রিয়্যালস্টিক কিনা, এতে সিকিউরিটি সেট হবে কি না। সেই সার্বিক বিবেচনায় তারা কোর্ট বসাতে পারে। কম্বোডিয়ায় এরকম কোর্ট বসেছে কিন্তু এর একটা প্রোসেস আছে।
নিয়ম অনুযায়ী নেদারল্যান্ডসের বাইরে অন্য কোন দেশেও আদালত পরিচালনার সুযোগ আছে। তবে মান বজায় রাখার পাশাপাশি খরচ এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নেয়া দরকার।
শরণার্থী ও অভিভাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, শুধু বাংলাদেশ দেশ নয়, যদিও এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এখানে দুটি পক্ষ হচ্ছে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার। কাজেই বাংলাদেশে না করে এটি আঞ্চলিকভাবে কোথাও করা যায় কি না যেখানে সরাসরিভাবে রোহিঙ্গাদের অবস্থান নেই। সেরকম কোথাও যদি এটা স্থাপন করা যায় তাহলে হয়তো এটি পরিচালনার ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি সহজতর হবে এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বেও থাকবে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এখনও অনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রস্তাব পায়নি বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কেউ কেউ বলছেন যে এখানে যদি হিয়ারিংটা হয় তাহলে অতি সহজে অনেকের হিয়ারিং নেয়া যেতে পারে। আইসিজেতে থেকে কোন অনুরোধ পাইনি কিংবা কোন কর্তৃপক্ষের থেকেও পাইনি। আসলে পরে তখন আমরা এটা নিয়ে আলাপ করবো।
তবে, বাংলাদেশে আদালত বসানোর ধারণা বাস্তবায়ন একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এএইচ/এমবি
আরও পড়ুন