রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি আগামীকাল
প্রকাশিত : ১১:৫৭, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আইনি সংস্থা আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচার আদালতে (আইসিজে) আগামীকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের শুনানি শুরু হবে। গাম্বিয়ার করা এ মামলার শুনানি তিন দিন চলবে।
শুনানি পর্যবেক্ষণে নেদারল্যান্ডসের হেগে গিয়েছে ২০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। তবে বাংলাদেশ নিজে এই মামলা না করায় বিধি মেনে এখনই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে। এছাড়া কক্সবাজারে আশ্রিত তিনজন রোহিঙ্গাও শুনানিতে হাজির থাকবেন। মিয়ানমার প্রকৃতই গণহত্যার অপরাধে অপরাধী কিনা, সেটি এবারকার শুনানিতেই সুরাহা হবে না।
এ পর্বে গাম্বিয়ার প্রতিনিধি দল আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন ‘ইনজাংশন’ চাইবেন যাতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন যে কোনো ধরনের নির্যাতনমূলক রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয় মিয়ানমার।
সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত যদি মনে করে এ ধরনের আদেশ বাঞ্ছনীয়, সে ক্ষেত্রে তারা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় সেনা অভিযান এবং অনুরূপ সহিংসতা নিবারণে মিয়ানমারের প্রতি নির্দেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ আদেশ পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইসিজের যে কোনো রুলিং চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য এবং এর বিরুদ্ধে কোনো আপিল করার সুযোগ নেই। যদিও নির্দেশ কার্যকরে বাধ্য করার কোনো উপায় নেই এ আদালতের। তবে গণহত্যা নিয়ে প্রধান অভিযোগের শুনানি আগামী বছর ২০২০ সালের শুরুতেই শুরু হতে পারে। যদিও আইসিজেতে করা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের এ জাতীয় মামলার নিষ্পত্তি হতে কখনো কখনো অনেক বছরও লেগে যেতে পারে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়তে নেদারল্যান্ড গিয়েছেন দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু কি। এর আগে তিনি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন।
কোনো দেশের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবচেয়ে গুরুতর হিসেবে বিবেচিত। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৫৭ সদস্যবিশিষ্ট ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে আইসিজেতে এ মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া। মামলার শিরোনাম ‘অ্যাপলিকেশন অব দ্য কনভেনশন অন দ্য প্রিভেনশন এন্ড পানিশমেন্ট অব দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইড’।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ কথিত হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল।
গত দুই বছরে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের এ ঘটনাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে অভিহিত করে জাতিসংঘ।
এমএস/
আরও পড়ুন