ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মহাকাশে বাণিজ্যিক স্টেশন স্থাপনের তোড়জোড়

আশরাফ শুভ

প্রকাশিত : ১৩:৪৭, ৩১ আগস্ট ২০২৪

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পর আর কোন অংশীদার ভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র তৈরি হবে না মহাকাশে। তার বদলে মহাকাশে জায়গা নিতে পারে বিভিন্ন দেশের একাধিক বাণিজ্যিক মহাকাশ স্টেশন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র চীন রাশিয়া ভারতসহ বিভিন্ন দেশ অন্তত ১০টি মহাকাশ কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। আইএসএস পরবর্তীযুগ মহাকাশ পর্যটনের নতুন দুয়ার উন্মোচন করবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

স্নায়ুযুদ্ধের পর দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া প্রথম যেভাবে এক হয়েছিল সেটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের চুক্তি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ছাড়াও বিশ্বের আরও ৩০টি দেশ এই মহাকশ কেন্দ্র পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। যার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব প্রকল্প বলা হয় আইএসএস'কে। 

২০৩০ সালে গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এরপর এতো বড় পরিসরে আর কোন যৌথ প্রকল্প দেখা যাবে না মহাকাশে। এর বিপরীতে মহাশূন্যে ছোট ছোট মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে বিভিন্ন দেশ। এতে পর্যটন বিকাশের পাশাপাশি নানাভাবে মহাকাশকে বাণিজ্যিকরণ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মহাকাশে প্রভাব বিস্তারের এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। আইএসআসের পর অন্তত ৫টি ব্যক্তিগত মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নাসা। এরই মধ্যে নতুন মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের জন্য স্পেসএক্স বোয়িংসহ বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কয়েকশ' মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। 

নাসার পরবর্তী ৫ মহাকাশ স্টেশনগুলো হচ্ছে অ্যাক্সিওম স্পেস স্টেশন, অরবিটাল রিফ, স্টারল্যাব, নর্থরুপ গ্রুম্যান স্টেশন, ভাস্ট স্পেস স্টেশন। ২০২৮ সালের পর থেকেই এসব স্টেশন প্রতিস্থাপনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে নাসার। 

মহাকাশের অন্যতম পরাশক্তি হওয়ার লড়াইয়ে আছে চীনও। এরই মধ্যে ২০২২ সালে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি তিয়ানগং মহাকাশ কেন্দ্রের প্রথম অংশ মহাশূন্যে স্থাপন করেছে বেইজিং। এতে তৃতীয় দেশ হিসেবে মহাকাশে স্টেশন তৈরির নজির গড়ছে চীন। থাকার ঘর, গবেষণাগার নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থার মতো বহু সুযোগ-সুবিধা রাখা রয়েছে তিয়ানগং বা স্বর্গের প্রাসাদ নামের এই কেন্দ্রে। 

২০৩০ সালের মধ্যে নিজস্ব স্পেস স্টেশন নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়াও। উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন ৪ মডিউল কোরের স্টেশনটি নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলার।  ২০২৭ সালে কেন্দ্রটির প্রথম অংশ মহাকাশে পাঠাতে চায় মস্কো। 

রাশিয়া, আমেরিকা এবং চীনের পর স্পেস স্টেশন নির্মাণ করে সারা বিশ্বে চতুর্থ স্থানের অধিকারী হতে চায় ভারত। ২০৩৫ সাল নাগাদ নিজস্ব প্রযুক্তির মহাকাশ কেন্দ্র স্থাপনের কথা জানিয়েছে ইসরো। জানা গেছে, ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন নামক এই কেন্দ্রের ভেতরে দুই থেকে চার জন নভোচারী থাকার ব্যবস্থা করা হবে। 

এয়ারবাস লুপ নামের একটি মহাকাশ কেন্দ্র নির্মাণে কাজ শুরু করেছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ৮ মিটার ব্যাসার্ধের একক মডিউলের এই স্টেশনটি তৈরি করা হচ্ছে মহাকাশে দীর্ঘকাল টিকে থাকার জন্য। এছাড়া নভোচারীদের জন্য ভ্রমণকে উপভোগ্য করাই হবে এই মহাকাশ কেন্দ্রের উদ্দেশ্য। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ জাপান ও কানাডার যৌথ উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে আরেক মহাকাশ কেন্দ্র গেটওয়ে। পাঁচ-মডিউলের স্টেশনটিকে চন্দ্রপৃষ্ঠে যাওয়ার পথে একটি বেস ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করতে চান বিজ্ঞানীরা। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি