গবেষণায় এবার মস্তিষ্কে খোঁজ মিললো প্লাস্টিকের
প্রকাশিত : ১১:১৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১১:২৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মানুষের শরীরে প্লাস্টিক রয়েছে এই তথ্য নতুন নয়। তবে নতুন এক গবেষণায় এবার মস্তিষ্কে প্লাস্টিকের খোঁজ পেয়েছে। আর এই তথ্য সামনে আসার পরই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে।
একদল গবেষক বছরের শুরুতে মস্তিষ্কের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, আট বছর আগে সংগ্রহ করা মস্তিষ্কের নমুনার তুলনায় এখন মানুষের মস্তিষ্কে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা বেশি পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে, যা মারাত্মক শংকার।
পানির বোতল থেকে শুরু করে বাজারের ব্যাগ, মোবাইল ফোন থেকে ল্যাপটপ— সবকিছুতেই প্লাস্টিকের ছোঁয়া। এক কথায় বলা যায় প্লাস্টিকের জগতে বাস আমাদের। বিভিন্ন খাবারেও মিলছে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব। সেই প্লাস্টিক এবার পৌঁছে গেছে মস্তিষ্কে। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে আসা এমন তথ্য চাঞ্চল্য ছড়াচ্ছে চিকিৎসা মহলে।
গেলো মে মাসে অনলাইনে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, মানব শরীরের ব্রেন, কিডনি আর লিভারের অটোপসি করে পরীক্ষা শেষে সবগুলো অঙ্গেই মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। ৯১টি ব্রেন স্যাম্পলে সারা শরীরের থেকে প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে- দেহের সবকটি অঙ্গের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণে সবথেকে বেশি জর্জরিত ব্রেন বা মস্তিষ্ক।
গবেষণা প্রতিবেদনটির মূল লেখক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন। তিনি যুক্তরাস্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক। তিনি বলেন, ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে গড় বয়সের ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ মস্তিষ্ক, বাকি অংশ প্লাস্টিক। ২০১৬ সালে মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করা মস্তিষ্কের নমুনার তুলনায় এটি প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি।
তিনি জানান, এই ন্যানো প্লাস্টিকগুলো কোনো না কোনোভাবে মানব শরীরে প্রবেশ করছে এবং মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে। প্লাস্টিক ফ্যাট বা লিপিড পছন্দ করে। তাই খাবারের মাধ্যমে যে ফ্যাট গ্রহণ করা হয় সেগুলোর সঙ্গে ন্যানো প্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করে। তারপর তা মস্তিষ্কসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে যায়। খাবার ছাড়াও শ্বাস গ্রহণের মাধ্যমেও প্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করে।
মূলত ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির গবেষণা করতে গিয়েই উঠে আসে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর এই তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে কীভাবে প্লাস্টিক দূষণের ফাঁদে পড়ছে মানব সভ্যতা। ধীরে ধীরে আমাদের মস্তিষ্ককেও গ্রাস করে নিচ্ছে এটি।
তাই সাবধান হওয়া জরুরি এখনই।
এএইচ
আরও পড়ুন