খরচ বেশি হওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছে ফোরজি
প্রকাশিত : ১৩:৩৩, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
প্রতিস্থাপন ব্যয় বেশি হওয়ায় শুরুতেই আগ্রহ হারাচ্ছে ফোরজি সিম। ফোরজির কথা শুনে অনেকে সেবাকেন্দ্রে এসে আবার ফিরে যাচ্ছেন। কারণ সিম প্রতিস্থাপনে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা। প্রতিস্থাপনের এ উচ্চ মূল্যের কারণে রাজধানী কয়েকটি সেবাকেন্দ্রে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
গত মঙ্গলবার ঢাকায় আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবি। এর মধ্যে গ্রামীণফোন চট্টগ্রামে এবং বাংলালিংক খুলনায় আর রবি চালু করেছে দেশের ৬৪ জেলায়। অপারেটরগুলো সিম প্রতিস্থাপনে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সংবাদ দিচ্ছে। এমনকি গণমাধ্যমেও এ সুযোগ নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন আকারে অনুরোধ জানানো হচ্ছে গ্রাহকদের। অপারেটরগুলোর ঘোষণায় উৎসাহ ও আগ্রহের সঙ্গে সিম প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে সাধারণ গ্রাহকরা। কিন্তু সেখানে সিম প্রতিস্থাপনে যে টাকা চাচ্ছে তা শুনে গ্রাহকদের মাথায় উঠছে হাত।গ্রাহকদের অভিযোগ একটা সিম এতো ঢাকঢোল পিটিয়ে আনা হলো। আর তার সব খরচ আমাদের সাধারণের থেকেই নেওয়া হচ্ছে?
রাজধানীর রামপুরা এলাকায় একটি খুচরা পর্যায়ের সেবা কেন্দ্রে রূপনা আক্তার এসেছিলেন সিম প্রতিস্থাপন করতে।এসে তিনি প্রতিস্থাপন ব্যয়ের কথা শুনে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।এমন সময় প্রতিস্থাপন না করে ফিরে যাওযার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিম বদলাতে ১২৫ টাকা দিতে হবে। ভাই অনেক বলেছি যে, একটা সিম প্রতিস্থাপনে কেন এতো টাকা নিবেন। একটু কমিয়ে নেন। এটা কী আপনারা নিচ্ছেন, না সরকার নিচ্ছে। এতোসব কথা বলেও সেবাকেন্দ্র থেকে সামান্য খরচ কমানোর সুযোগ পেলাম না। বাধ্য হয়েই ফিরে যাচ্চি। কারণ এতো টাকা দিয়ে আমার প্রতিস্থাপনের দরকার নেই। আগেই তো চলছিল। সেভাবেই চলবে।
তিনি বলেন, সেবা কেন্দ্র থেকে আমাকে জানালো- এই ১২৫ টাকার মধ্যে ১০০ টাকা সরকারের ট্যাক্স, ১০ টাকা অপারেটরের আর ১৫ টাকা তার নিজের। মোবাইল ফোন অপারেটরের নিজস্ব গ্রাহক সেবাকেন্দ্রে গেলে ১৫ টাকা কম অর্থাৎ ১১০ টাকা লাগবে। তবে আমি যদি স্টার গ্রাহক হয় আমার কোন টাকা লাগবে না।
ওই দোকানে সিম প্রতিস্থাপনে আসা জিসানও বললেন একই কথা। তার অভিযোগ স্টার হলে তার কাছে থেকে টাকা নেওয়া হবে না। আর সাধারণের কাছ থেকে নেওয়া হবে ১২৫ টাকা। এটা কোন ধরণের বৈষম্য। আসলে ফোরজি সিম কী ভিআইপিদের জন্য আনা হয়েছে।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবীর বলেন, ফোরজি সেবার সুবিধা সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সিম প্রতিস্থাপন কর, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং হ্যান্ডসেট আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার করা জরুরি।তা না হলে এর সব চাপ গিয়ে পড়বে সাধারণের ওপর।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাজারে ফোরজি ব্যবহারোপযোগী হ্যান্ডসেট আছে মাত্র ১০ শতাংশ। এর অর্থ, সারাদেশে এখনই ফোরজি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেওয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ ফোরজি সেবা নিতে পারবেন। হ্যান্ডসেটের মূল্য সুলভ করার ক্ষেত্রেও বড় বাধা হচ্ছে সরকার আরোপিত শুল্ক্ক। হ্যান্ডসেট আমদানিতে ভ্যাটসহ প্রায় ৩০ শতাংশ কর বিদ্যমান থাকার কারণে হ্যান্ডসেটের মূল্য সাধারণের নাগালে আসতে পারছে না। মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ প্রায় ২৩ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে এখন গ্রাহকদের। এর ফলে ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম শুরুতেই ২৩ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ফোরজির ব্যবহার উৎসাহিত করতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত।
আরকে// এআর
আরও পড়ুন