১ বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ
জুনের মধ্যে ৩০ শতাংশ এলাকায় ফোর-জি
প্রকাশিত : ২০:১৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২০:৪৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে দেশের ৩০ শতাংশ এলাকায় ফোর-জি সংযোগ পৌছে দেবে বাংলালিংক। চতুর্থ প্রজন্মের এই মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুসহ গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি করতে গত এক বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দেশের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক। পাশাপাশি আগামী তিন বছরে আরও প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৮ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথাও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
ফোর-জি সংযোগ চালু ও বিস্তৃতকরণ এবং প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক বাণিজ্যিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে গুলশানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যারিক অস।
এসময় তিনি বলেন, স্পেকট্রাম, ফোর-জি লাইসেন্স এবং টেক নিউট্রালিটির জন্য বাংলালিংক এখন পর্যন্ত ৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশ। সামনের তিন বছরে এর পরিমাণ আট বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে; যা বাংলাদেশে কোন মোবাইল সংযোগ দেওয়া অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি।
গ্রাহকদের আরও উন্নত সেবা দিতে দ্রুততম সময়ে ফোর-জি নেটোয়ার্ক বিস্তৃত করণে বাংলালিংক কাজ করছে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটির এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
গ্রাহকদের উন্নত সেবা নিশ্চিতকরণে টাওয়ার শেয়ারিং, রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক, টাওয়ার ডিসপোজাল এবং উন্নত নেটওয়ার্ক তৈরিতে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের প্রায় সাড়ে নয় হাজার বিটিএস টাওয়ার আমরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রি করতে যাচ্ছি। এ থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় হবে তাই আবার গ্রাহকদের সেবা বৃদ্ধির কাজে বিনিয়োগ করা হবে। আর এতে করে দেশের টাওয়ারের সংখ্যাও কমে যাবে যা পরিবেশ বান্ধব হবে। কারণ তখন একই টাওয়ার একাধিক মোবাইল ফোন অপারেটররা ব্যবহার করতে পারবেন।”
ফোর-জি লাইসেন্স ইস্যুতে সরকারের সাথে প্রতিষ্ঠানটির চুক্তির সূত্র ধরে তিনি বলেন, “লাইসেন্স দেওয়ার সময় সরকার শর্ত দিয়েছিল যে পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে দেশের সকল জেলা শহরে ফোর-জি পৌছে দিতে হবে। আমরা আগামী তিন মাসের মধ্যে এটি করে দেখাবো। জুন মাসের মধ্যেই দেশের সবগুলো জেলা শহরে ফোর-জি থাকবে”।
তবে গত বছর বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যা থাকার বিষয়টি মেনে নিয়ে আগামীতে এমনটা হবে না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “গ্রাহকদের যেন নেটওয়ার্ক নিয়ে কোন সমস্যা না হয় এর জন্য আমরা টেক নিউট্রালিটি নিয়ে কাজ করেছি। একই ব্যান্ডউইথের স্পেকট্রাম দিয়ে টু-জি, থ্রী-জি অথবা ফোর-জি যার যেমন চাহিদা আছে তাকে সেভাবেই সেবা দেওয়া হবে। গ্রাহকদের যেন নেটওয়ার্ক জনিত কোন সমস্যা না হয় শুধু সেজন্যই আমরা চারশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি”।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিপনন কর্মকর্তা মাইক মিশেল এসময় সাংবাদিকদের বলেন, “এখন পর্যন্ত ঢাকাসহ খুলনা, সিলেট এবং চট্টগ্রামে ফোর-জি চালু করেছি আমরা। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ জনগণকে আমরা ফোর-জি আওতার মধ্যে আনব”।
গ্রাহকদের বাংলালিংকের ফোর-জি’র বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে পাঁচ গিগাবাইট ফোর-জি ইন্টারনেট বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলেও জানান মাইক। এছাড়া বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মোট গ্রাহকদের মধ্যে ১০ শতাংশের কিছু কম ফোর-জি সেবা নিচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ফোর-জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা গ্রাহকের বর্তমান সংখ্যা আমাদের মোট গ্রাহকের ১০ শতাংশের নিচে। তবে ফোর-জি চালুর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার গ্রাহক এই সেবার সাথে যুক্ত হচ্ছেন। সামনের দিনগুলোতে বাংলালিংকের গ্রাহকেরা লক্ষণীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন”।
গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির যখন কথা হচ্ছে সেখানে থ্রী-জি থেকে ফোর-জি’তে রুপান্তরের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে সিম পরিবর্তনের জন্য কেন টাকা নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, সরকারকে সিম পরিবর্তনের জন্য ১০০টাকা করে শুল্ক আরোপ করতে হয়। গ্রাহকেরা যে টাকাটা দিচ্ছে তা সরকারকেই দিচ্ছেন। বাংলালিংক বিনামূল্যেই গ্রাহকদের সিম পরিবর্তন করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন