স্টিফেন হকিং সম্পর্কে ১০ মজার তথ্য
প্রকাশিত : ১৩:৩১, ১৫ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৪৩, ১৫ মার্চ ২০১৮
খুব কম মানুষই আছেন যারা বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে মহাবিশ্বের রহস্য উদঘাটনের পথে আছেন। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ আমাদের দুনিয়া দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সমর্থ হয়েছেন। স্টিফেন হকিং তাদেরই অন্যতম একজন।
বিখ্যাত এই তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী গতকাল বুধবার মারা গেছেন। বিজ্ঞানের দুনিয়ায় সবচেয়ে পরিচিত মুখ হকিংয়ের গবেষণা ও কাজ কয়েক দশক ধরেই মানুষকে মুগ্ধ করেছে। স্টিফেন হকিংয়ের জীবন নানারকম বিস্ময় আর রোমাঞ্চে ভরপুর। তার গবেষণা জীবনের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন রসিক প্রকৃতির ও চাঞ্চল্যপূর্ণ মানুষ। তাঁর সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন:
১. গ্যালিলির ৩০০তম মৃত্যুবার্ষিকী হকিংয়ের জন্ম
স্টিফেন হকিং ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে ওঠেন সেন্ট আলবানসে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। হকিংয়ের বাবা ফ্র্যাঙ্ক হকিং ছিলেন জীববিজ্ঞানের গবেষক। মা ইসাবেল হকিং রাজনৈতিক কর্মী। বাবা চেয়েছিলেন, হকিং বড় হয়ে চিকিৎসক হোক। ছেলেবেলা থেকেই হকিংয়ের আগ্রহ বিজ্ঞান আর গণিতে। তাঁর জন্মদিনের তারিখ আরেক বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলির ৩০০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
২. গণিতে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও পড়তে হয়েছিলো পদার্থবিজ্ঞান
১৭ বছর বয়সে ১৯৫৯ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন হকিং। গণিতে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত পড়ার সুযোগ না থাকায় পড়েন পদার্থবিজ্ঞান। সেখানে তিনি প্রথম বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
৩. আইনস্টাইনের পরই হকিং
আইনস্টাইনের পর হকিংকে বিখ্যাত পদার্থবিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই হকিংয়ের নামানুসারে এক কণাস্রোতের নাম দেওয়া হয়েছে হকিং বিকিরণ।
৪. ২১ বছর বয়স থেকে এএলএস রোগ
তিনি মাত্র ২১ বছর বয়স থেকে অ্যামায়োট্রফিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস (এএলএস) রোগে ভুগছিলেন। এ রোগ খুব কম দেখা যায়। এটি খুব ধীরে ধীরে মানুষকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে ফেলে।
৫. ভোকাল কর্ড ও ল্যারিংস নষ্ট
১৯৮৫ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর ভোকাল কর্ড ও ল্যারিংস নষ্ট হয়। এতে কি-বোর্ড চালিত ইলেকট্রনিক স্পিচ সিনথেইজার তাঁর হুইলচেয়ারে বসানো হয়।
৬. সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বই তার ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’
১৯৮৮ সালে তাঁর লেখা ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইটি সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের একটি। ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর ও আপেক্ষিকতা নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি। চার বছরের বেশি সময় ধরে সানডে টাইমসের সেরা বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকার শীর্ষে ছিল এটি।
৭. শিশুতোষ বইয়ের লেখক
২০০৭ সালে হকিং ও তাঁর মেয়ে লুসি হকিং মিলে শিশুদের জন্য জনপ্রিয় বই ‘জর্জ’স সিক্রেট কি টু দ্য ইউনিভার্স’ লেখেন। এর তিনটি সিক্যুয়াল রয়েছে।
৮. এক ডজন সম্মানসূচক ডিগ্রি
এই পদার্থবিজ্ঞানীর সম্মানসূচক ডিগ্রির সংখ্যা এক ডজন। ১৯৮২ সালে সিবিই অর্জন করেন তিনি। রয়্যাল সোসাইটির ফেলো ও ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সের তিনি সদস্য।
৯. তিন সন্তানের জনক হকিং
২৫ বছরের বিবাহিত জীবনে তিন সন্তানের জনক হকিং। জেন হকিংয়ের সঙ্গে ১৯৯৫ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাঁর। পরে নার্স এলাইন মেসনকে বিয়ে করেন ব্রিটিশ এই পদার্থবিদ।
১০. প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পুরস্কার
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পুরস্কারে ভূষিত করেন।
সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স।
একে// এআর
আরও পড়ুন