ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ব্লগারের বয়স ১০৫ বছর!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৭, ৬ জুলাই ২০১৮

আধুনিক সময়ে ইন্টারনেটের জনপ্রিয় ব্যবহার ব্লগিং। সাধারণত কম বয়সীরা ব্লগিং করলেও আছেন প্রৌঢরাও। কিন্তু তাই বলে ১০৫ বছর বয়সী? হ্যাঁ এমনই এক ব্লগার আছেন সুইডেনে। ১০৫ বছর বয়সী এই ব্লগার রীতিমতো সুইডেনের একজন ‘তারকা ব্লগার’।

যে ব্লগারের কথা বলছি তার নাম ডাগনি কার্লসন। কম্পিউটারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছেই ১০০ বছর বয়সে। যেসময় মানুষ পরকালের চিন্তা বেশি করে সেই বয়সে কম্পিউটার নিয়ে এক রকম ঘরোয়া গবেষণা শুরু করেন ডাগনি।

গরম কফি আর খবরের কাগজ দিয়ে দিনের শুরুটা হয় ডাগনি’র। বয়স যাই হোক, নিজ বাসার অলিগলি থেকে দুনিয়ার আরেক প্রান্তে কী হচ্ছে তার খবর চাই-ই চাই আর সেসব জানতে ইন্টারনেটে অনেকখানি সময় ব্যয় করেন ডাগনি। তিনি বলেন, ‘‘আমার জীবনটা আজ, এখানে৷ আমি আগামীকালের কথা, কাল যে আমার মরণ হতে পারে, সেকথা ভাবি না৷ মৃত্যু তো আসবেই৷``

ডাগনির কাছে কম্পিউটার হলো এক বন্ধুর মতো। এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে চলেন ডাগনি৷ ১০০-তম বয়স পূর্ণ হওয়ার খুশিতে স্বজনেরা ডাগনিকে একটি কম্পিউতার উপহার দিয়েছিলেন। সেই থেকে শুরু। ডাগনি তখন সেই ‘জাদুর বক্সে’র রহস্য ভেদ করতে শুরু করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘৯৯ নাকি ১০০ বছর বয়স থেকে আমার কম্পিউটারটা আছে... লোকে বলে, ৯০ পার হলে নাকি আর কম্পিউটার কেনার কোনো অর্থ হয় না৷``

বর্তমানে কম্পিউটার ছাড়া একটা দিন ডাগনি’র কাছে লিকার ছাড়া চা এর মতো। ডাগনি বলেন, ‘‘কম্পিউটার আমার অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কম্পিউটার থাকায় আমার বান্ধবীদের সঙ্গে আলাপ করতে পারি– ডাকটিকিটের দরকার পর্যন্ত পড়ে না৷ খবর পড়তে পারি৷ কম্পিউটার আমার খুব ভালো লাগে৷``

কম্পিউটারে বিভিন্ন লেখা পড়ার পাশাপাশি নিয়মিত লেখেন ডাগনি কার্লসন। ১০৫ বছর বয়সে এসে লেখিকা হওয়ার স্বপ্নটাও একরকম পূরণ করে নিচ্ছেন তিনি। ডিজিটাল ডাইরি লেখেন ডাগনি৷ তার ব্লগের নাম ‘ব্লগা মেট মে` বা  ‘আমার সঙ্গে ব্লগ করো’। তিনি বলেন, ‘‘আমার চিরকালই লেখক হবার ইচ্ছে ছিল, বিশেষ করে যখন ছোট ছিলাম৷ কিন্তু দুনিয়ায় এতো ভালো বই আছে যে, তার সঙ্গে আমার একটা খারাপ লেখা যোগ করা আমার কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়৷ ব্লগ লেখার সময় কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর দরকার নেই– যা প্রাণ চায়, তাই লিখতে পারি৷ কিন্তু আমার ১০৫ বছর বয়স না হলে সেদিকে কেউ তাকাতো না৷``

নিজ ব্লগে নানা বয়সের অনুসারি আছে ডাগনি’র। তিনি বলেন, ‘‘নয় বছর বয়সের ছেলেমেয়েরা কমেন্ট লেখে, ‘তুমি সত্যিই ‘কুল`৷ আমার খুব গর্ব হয়”।

রাজধানী স্টকহোম থেকে দক্ষিণে অবস্থিত লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ধক্যবিদ্যা সমিতির একটি পুরস্কারে ভূষিত হতে চলেছেন ডাগনি। কারণ তিনি ও তার ব্লগ সারা দেশের প্রবীণ-প্রবীণাদের পক্ষে একটি আদর্শ বলে মনে করে ওই সমিতি। প্রশংসাপত্রেও তাই বলা হয়েছে। দৃশ্যত ডাগনিরও পুরস্কার নিতে, অভিনন্দিত হতে বা তার ব্লগিং সম্পর্কে কথাবার্তা বলতে ভালোই লাগে। তিনি বলেন, ‘‘একদিন যদি আমার ব্লগ না লিখি, তো সকলে সঙ্গে সঙ্গে ভাবে – আমি মারা গেছি৷``

প্রায় ২,০০০ ইউরো পরিমাণ পুরস্কারের অর্থ ডাগনি তার জন্মদিনের পার্টির জন্য খরচ করবেন বলে স্থির করেছেন৷ তবে তার সেরা সময় কাটানোর উপায় হল বাড়িতে, কম্পিউটারের সামনে বসে৷ ডাগনি বলেন, “মানুষও কম্পিউটারের মতো। চাইলে বুড়ো না হয়েও থাকা যায়”।

 

এসএইচএস/এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি