ঢাকা, শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ডিজিটাল মার্কেটিং, ইন্টারনেট মার্কেটিং ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? (পর্ব-১)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:০৭, ২১ নভেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৯:০৯, ২১ নভেম্বর ২০২০

বর্তমান যুগ ইন্টারনেটের যুগ। এখন ঘরে বসে মানুষ বিশ্বের প্রায় সব কাজ করছে। বলা যায়- পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। এই ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে যে ব্যবসায়িক মাধ্যম গড়ে উঠেছে সেটাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এককথায় বলা যায়, ডিজিটাল মার্কেটিং হলো- ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য, প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ডের প্রচারণাকে বোঝায়। ইন্টারনেট ব্যবস্থা ডিজিটাল মার্কেটিং-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। যেমন- গুগল, ইউটিউব, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

মূলত মার্কেটিং হচ্ছে- যে কোনও পণ্য অথবা সার্ভিস এর প্রমোশন করা, প্রচার করা এবং ওই পণ্যের ক্রেতা তৈরি করা। এই মার্কেটিং আপনি যখন অনলাইনে করবেন সেটা হবে- “ডিজিটাল মার্কেটিং”। আপনি যখন এই “ডিজিটাল মার্কেটিং” স্কিলটা নিজের কোনও প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসের বিক্রয় ও প্রমোশনের জন্য ব্যবহার করবেন, তখন সেটা হবে ইন্টারনেট মার্কেটিং। আর আপনি যখন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিলটা ব্যবহার করে অন্য কারও প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করবেন, সেটা হবে- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনার জন্য ভালো একটি ক্যারিয়ার হবে কিনা- তা এখনি জানা যাবে। নিচে লেখা সবগুলো বিষয় যদি আপনার সাথে মিলে যায়, তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনার জন্য। আর একটি যদি না মিলে, যত দিন আপনি ওই জিনিসটি মেলাতে না পারবেন, ভালো মার্কেটার হতে ওই একটি বাঁধা আপনার রয়ে যাবে।

বিষয়গুলো হলো:
-কম্পিউটারটি আমার মন মতো, এই কম্পিউটারে আমি কাজ করে আনন্দ পাই।
-আমার ইন্টারনেট লাইনটি আনলিমিটেড, আর আমি সহজেই ইউটিউবে কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই ভিডিও দেখতে পারি।
-আমার একটি প্রিন্টার আছে।
-আমার একটি আলাদা কাজের জায়গা আছে, আর কাজের সময় কেউ আমাকে ডিস্টার্ব করে না।
-আমি স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি, আর স্বপ্ন সত্যি করার জন্য আমি নিরলস পরিশ্রম করতে রাজি।
-আমার ইংরেজি দক্ষতা খুবই ভালো, আমি যা শুনি সহজেই বুঝি, আর আমি কোনও সমস্যা ছাড়া ইংরেজি লিখতে পারি।
-নতুন বিষয়ে পড়াশোনা করতে, গবেষণা করতে আমার ভালো লাগে।
-খুব সূক্ষ্ম ভুলও আমার চোখ এড়ায় না, যা করি একদম ভালোভাবে করি।
-বন্ধু, আড্ডা, খেলাধুলা, বেড়ানো- এ সবকিছুর চেয়ে বেশি আমি আমার ক্যারিয়ারকে মূল্য দেই।
-আমি কখনওই হার মানি না, একটি কাজ শুরু করলে সেটা শেষ করেই ছাড়ি।
-আমি প্রতিদিন অন্তত ৩ ঘণ্টা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে কাজ করতে পারব।
-আমার হাতে ২০-২৫ হাজার টাকা আছে, যা শেখার কাজে শেষ হলেও কোনও অসুবিধা নাই।
-অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে এখনি উপার্জনের চেয়ে ভালোভাবে শেখাটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
-মানুষের মন-মানসিকতা ও চিন্তাধারা (Customer Phycology) সম্পর্কে জানতে ভালো লাগে।
-যে কোনও কিছু সম্পর্কে আমি বিস্তারিত তথ্য খুঁজে বের করতে পারি গুগল থেকে।
-আমার মধ্যে লোভ খুব একটা কাজ করে না। তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়াতে আমি বিশ্বাসী না।
-আমি জানি আমি পারব, আমি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী, সামনের বছর এই সময় আমি একজন সফল মার্কেটার হয়ে দেখাব।

উপরের এ সবগুলো বিষয় যদি আপনার সাথে মিলে যায়, তাহলে- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আপনি সফল হবেন-ই, ইনশাআল্লাহ।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে যা জানা দরকার-


১. নিস কিঃ 
সহজ ভাষায় নিস হচ্ছে- “ইন্ডাস্ট্রি”। মার্কেটে গেলে যেমন দেখা যায়– কাপড়ের দোকান, খাবারের দোকান, জিম, বিউটি পার্লার ইত্যাদি। আপনি জানেন, ইন্টারনেটেও রয়েছে ফুড-এর ওয়েবসাইট, ড্রেসের ওয়েবসাইট, বিভিন্ন বিউটি প্রোডাক্ট ইত্যাদি। এখন খাবারের দোকান যেমন- “ফুড ইন্ডাস্ট্রি” এর মধ্যে, একইরকম “ফুড-এর ওয়েবসাইট” হচ্ছে- “ফুড নিস”। অর্থাৎ অফলাইনে যা ইন্ডাস্ট্রি, অনলাইনের ভাষায় তা “নিস”। 

নিস-কে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও প্রোডাক্টের ক্যাটাগরিও বলা চলে। যেমন– “Career & Jobs”। এই ক্যাটাগরিতে আছে যত রকম জব ও ক্যারিয়ার ভিত্তিক ওয়েবসাইট, প্রোডাক্ট ও সার্ভিস। আপনি যদি কোনও ক্যারিয়ার রিলেটেড প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান– উদাহরণসরূপ, oDesk যদি প্রোমট করেন, তাহলে আপনার নিস হচ্ছে- “Career & Jobs”। উল্লেখ্য, অনেকেই হয়তো ভাববেন– oDesk হবে Freelancing ক্যাটাগরি বা নিস-এ। হ্যা এটা সত্য, oDesk আসলেই “Freelancing/Outsorcing” নিস-এর অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু একইসঙ্গে আবার “Career & Jobs” ও হতে পারে। একটু পেঁচানো মনে হচ্ছে? হওয়াটাই স্বাভাবিক! আসলে নিস-এর মধ্যে একটি জিনিস আছে– সেটা হচ্ছে “সাব নিস”। 

এখানে oDesk যদি প্রোডাক্ট হয় তাহলে এর নিস হবে– Career & Jobs > Freelancing/Outsourcing. অর্থাৎ প্রধান নিস হচ্ছে “Career & Jobs” আর সাব নিস হচ্ছে “Freelancing/Outsourcing”। আরও কিছু উদাহরণ দেয়া যায়, যেমন– Food & Cooking > Recipies অথবা Sports > Football > Shoes। আপনি একটি প্রধান নিস-এর যত ভিতরে যাবেন (সাব নিস) আপনার জন্য ততো সহজ হবে কাজ শুরু করা।

২. কোথায়, কিভাবে আপনার পছন্দের নিস থেকে ভালো মানের কমিশন ভিত্তিক প্রোডাক্ট পাবেন প্রমোশন এর জন্যঃ
বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার পছন্দ মতো প্রোডাক্ট পাবেন আপনার পছন্দের নিস-এ। আপনি একটু গুগলে সার্চ করলেই অন্তত ৫০টি ভালো মানের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস পাবেন। তবে শুরু করার জন্য সবচেয়ে ভালো হচ্ছে- ClickBank.com. বাংলাদেশ থেকে কিভাবে ক্লিকব্যাংক-এ কাজ করবেন সেটা https://www.youtube.com/watch?v=m6qY9BBwdPI-এই ভিডিওটি দেখলেই শিখতে পারবেন। 

এছাড়া আপনি শুরু করতে পারেন Jvzoo-এ, অথবা LinkShare-এ। মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট ওপেন করা, কাজ শুরু করা কোনও ব্যাপার-ই না, ইউটিউবে খুঁজলেই অনেক ভিডিও পাবেন। আর আপনি যদি ClickSure-এ কাজ শুরু করতে চান, তাও করতে পারেন। তবে আমার মতে শুরু করার জন্য সবচাইতে ভালো হচ্ছে ClickBank. আপনি এই মার্কেটপ্লেসে আপনার মনের মতো প্রোডাক্ট পাবেন।  চলবে...

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি