বিজয়ী ৫ বাংলাদেশি স্টার্টআপকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ডেমো ডে
প্রকাশিত : ১৬:১৮, ১৭ আগস্ট ২০২১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অন্যতম উদ্যোগ ‘আইডিয়াথন’ কনটেস্ট। বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ-আয়োজন এই কনটেস্টের বিজয়ী সেরা ৫ বাংলাদেশি স্টার্টআপকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভার্চুয়াল ডেমো ডে সিরেমনি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) কর্তৃক আয়োজন করা হয় ‘বাংলাদেশ ফ্রন্টিয়ার স্টার্টআপস্ বিজনেস প্রিপ্যারেশন সাপোর্ট’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ডেমো ডে সিরেমনি। এই আয়োজনে বাংলাদেশি ৫ বিজয়ী স্টার্টআপ বিজ্ঞ বিচারকদের সামনে প্রেজেন্টেশন দেন এবং সবশেষে এএনটিটি রোবোটিক্স লিমিটেডকে প্রথম স্থান বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
উক্ত আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপি। কেপিসি এবং বাংলাদেশ ফ্রন্টিয়ার স্টার্টআপস্ বিজনেস প্রিপ্যারেশন সাপোর্ট প্রজেক্টকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই আয়োজন দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের আরেকটি মাইলফলক যোগ করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয় বরং এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক বাস্তবতা। লকডাউনের কারণে দেশগুলো অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হলেও বাংলাদেশ মানুষের জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে। শুধুমাত্র আমাদের অর্থনীতি নয়, আমরা একটি একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গণ-টিকাদানের মত চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে পেরেছি।’
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ইতিমধ্যে ৮ হাজারেরও বেশি স্কুল ও কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রযুক্তি এবং সৃজনশীলতা মাধ্যমগুলোকে বিকেন্দ্রীভূত করার জন্য প্রায় ৩শ’টি ‘ফিউচার অব স্কুল’ বাস্তাবয়ন করা হচ্ছে। যেখানে স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের কোডিং, প্রোগ্রামিং, ক্রিটিকাল থিংকিং, ডিজাইন থিংকিং এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির জন্য তাদের প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশের সুবিধা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। যাতে নন-গ্র্যাজুয়েট যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরকে লক্ষ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট এবং থিসিস বা রিয়েল লাইফ প্রোডাক্ট সেবার গবেষণাপত্র চালু করে নতুন ও উপযুক্ত উদ্ভাবন এবং একাডেমিয়া থেকে শিল্পের মধ্যে একটি নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ তৈরি করতে পারি সেই প্রচেষ্টাও চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন বলেন, বাংলাদেশী স্টার্টআপ যারা এই প্রোগ্রামে যোগদান করেছে তারা সফলভাবে প্রোগ্রামের প্রত্যাশা এবং প্রাথমিক লক্ষ্যসমূহ পূরণ করেছে।
তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করে আরও বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে এবং দেশটি দারুণ কাজ করছে। দেশটি সফলভাবে করোনা মহামারী মোকাবেলা করছে এবং এটি সত্যিই প্রশংসনীয়।
পরিশেষে আইডিয়াথন বিজয়ী যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬ মাসের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন তাদের অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূত।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ। অনুষ্ঠানটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) এর চেয়ারম্যান আন ওয়াং-জি। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব পার্থপ্রতিম দেব, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব মো: আব্দুর রাকিব।
উল্লেখ্য, মুজিব শতবর্ষে ‘Let’s Start You Up’ স্লোগান নিয়ে আয়োজিত ‘আইডিয়াথন’ কনটেস্টের বিজয়ী পাঁচ দল গত ডিসেম্বরে কঠোর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানে এই ৫ বাংলাদেশি স্টার্টআপ বিজয়ী হিসেবে পুরস্কার ও সম্মাননা গ্রহণ করে। সবশেষ গত ৮ মার্চ ৬ মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এই বিজয়ী দলগুলোর ১০ জন তরুণ উদ্যোক্তা।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ১০ জন তরুণ উদ্যোক্তার ৬ মাসের প্রশিক্ষণ প্রদানের যাবতীয় খরচ বাবদ প্রায় ৪ কোটি টাকা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় আইডিয়া প্রকল্প হতে বহন করা হয়েছে। (বিজ্ঞপ্তি)
এএইচ/
আরও পড়ুন