ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

দুই দশকের পথে ফেসবুক, শুরুটা কেমন ছিলো?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৬, ১৮ মে ২০২৩

আজকাল অনেক শিশুরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নাম জানে, ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবহারও করে। প্রযুক্তিপ্রিয় মানুষ অথচ ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট নেই, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া এখন সত্যিই মুশকিল। ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্বের চিরাচরিত সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। বিশ্বখ্যাত বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার নিয়ে জাকারবার্গের ছিল সীমাহীন আগ্রহ। হার্ভার্ডে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পর জাকারবার্গের সারাক্ষণই কাটত কম্পিউটার নিয়ে। এই সময় তিনি বন্ধুদের চমকে দেওয়ার জন্য বেশকিছু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট তৈরি করেন।

প্রথম তিনি তৈরি করেন ‘কোর্সম্যাচ' নামের একটি সাইট । এই সাইটে ব্যবহারকারীরা কে কোথা থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন সেটা দেখতে পেতেন। এরপর জাকারবার্গ 'ফেস ম্যাশ' নামে আরেকটি নেটওয়ার্কিং সাইট করেন। সেখানে ব্যবহারকারীরা ছবি দেখে কে কতটা আকর্ষণীয় সে অনুযায়ী রেটিং দিতেন।

অনেকটা খেলাচ্ছলেই এসব সাইট তৈরি করেছিলেন জাকারবার্গ। এই দুই সাইটের জনপ্রিয়তার পর ফেসবুক তৈরির কাজে হাত দেন তিনি। মাত্র ২৩ বছর বয়সে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুক তৈরি করেন জাকারবার্গ। ভর্তি হওয়ার পর হার্ভার্ডের নতুন শিক্ষার্থীদের একটা কাগজ পূরণ করতে হতো, যেখানে তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় লেখা থাকত। সেই কাগজ পরিচিত ছিল 'ফেসবুক' নামে। আর সেখান থেকেই নিজের ওয়েবসাইটের নাম রাখেন জাকারবার্গ।

হার্ভার্ডের ডরমিটরিতে বসেই ফেসবুক চালু করেন জাকারবার্গ। তবে তিনি একা নন। ফেসবুক চালুর সময় জাকারবার্গের সঙ্গে কাজ করেন তার সহপাঠী এবং রুমমেট এডওয়ার্ড সাভেরিন, অ্যান্ড্রু ম্যাককলাম, ডাস্টিন মস্কোভিজ ও ক্রিস হগস। শুধু হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের জন্যই সাইটটি তৈরি করেছিলেন তারা। হার্ভার্ডের পর ফেসবুক চালু হয় বোস্টনের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে একাউন্ট করা শুরু করেন। এরপর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্কুলে ক্যাম্পেইন শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই যুক্তরাজ্যে যাত্রা শুরু করে ফেসবুক।

প্রথমদিকে শুধু শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলত। এখন সব বয়সীরাই ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলতে শুরু করেন। ২০০৭ সালে ফেসবুক ঘোষণা করে বিশ্বজুড়ে তিন কোটি মানুষ এটি ব্যবহার করছেন। এর পর থেকে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বর্তমান বিশ্বের সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। এই ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কে এখন যুক্ত রয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। ফেসবুক এখন বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত ওয়েবসাইট। যে গুগল ব্যতীত ইন্টারনেট কল্পনা করা যায় না, বর্তমানে সেই গুগলকেও ছাড়িয়ে গেছে ফেসবুক।

২০১৯ সালের শেষ নাগাদ ফেসবুকে মাসে সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৪৫ কোটি। বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ এই সামাজিক মাধ্যমটি ব্যবহার করেন। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা বাতিল করেছে ৫৪০ কোটি ভুয়া একাউন্ট। ফেসবুক এখন ১০ হাজার কোটি ডলারের একটি অতিকায় প্রতিষ্ঠান। বছরে এর আয় ৫৫০০ কোটি ডলার। এখানে কাজ করছেন ৩০ হাজারের বেশি কর্মী।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি