চিনের সহায়তায় বিকশিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৫০, ২৯ অক্টোবর ২০২৩
বিশ্বের ৪৪টি শীর্ষ প্রযুক্তির ৩৭টি রয়েছে চীনের কাছে। দেশটির সহায়তায় বাংলাদেশ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নসহ প্রযুক্তি খাতে এগিয়েছে। দেশের কয়েকটি কোম্পানির আন্তর্জাতিক মানের হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা। দেশের কারিগরি ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা নেয়ার সুযোগ আছে বলছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।
অস্ট্রেলিয়া থিংক ট্যাঙ্ক স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন বলছে, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, রোবোটিক্স, জ্বালানি, পরিবেশ, বায়োটেকনোলজি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে আধিপত্য বিস্তার করে চীন বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি পরাশক্তি হওয়ার পথে।
গুরুত্বপূর্ণ ৪৪টি প্রযুক্তির মধ্যে ৩৭টি রয়েছে চীনের হাতে। এ কারণেই বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে চীন।
অন্যদিকে গত দেড় দশকে বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাত বিকশিত হয়েছে। নানা খাতে বেড়েছে প্রযুক্তির ব্যবহারও। তবে প্রযুক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে। প্রোডাক্টস স্পেস ম্যাপ অনুসারে প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন ও উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন কাজে এখনও বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষম নয়।
বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তৈরি পোশাক শিল্পের আধুনিকায়ন, বিভিন্ন মেশীনারিজ সরবরাহসহ সর্বোপরি দেশের ডাটা সংরক্ষণের দেশটি বড় ভূমিকা রাখছে। চীনের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক মান।
বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক মামুন আল মৃধা বলেন, “বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ার্সরা এবং ওয়ার্কার্সরা চীনাদের সঙ্গে মিলে স্কিলড হয়েছে। তবে এটা এখনও যথেষ্ট পরিমাণে হয়নি। কিন্তু আমাদের চীনা বন্ধুরা এই আশ্বাস দিয়েছেন কোনো প্রয়োজনে যে ধরনের টেকনোলজির দরকার হবে তারা সেগুলোর সাপোর্ট দিবে।”
ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক তোফায়েল আহমেদ বলেন, “ইলেক্ট্রনিক্স বা অন্য যেগুলো আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট হিসেবে তাদেরকে নিয়ে যদি কাজ করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ শুধুমাত্র গার্মেন্টস সেক্টর নয় পাশাপাশি অন্য সেক্টরেও ভালো অবদান রাখা সম্ভব হবে।”
অর্থনীতিবিদ ও আইটি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে চীন বিনিয়োগ করলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রযুক্তি হস্তান্তরেরও সুযোগ তৈরি হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি জনবল নিয়োগে শর্ত থাকা উচিৎ বলছেন তারা।
অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “চায়নিজ টেকনোলজি নেয়ার ক্ষেত্রে দুটি উৎস আমাদের ব্যবহার করা দরকার। একটি হচ্ছে চায়নিজ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং আরেকটি হচ্ছে আমদানির মাধ্যমে চায়নিজ প্রযুক্তি হস্তান্তর। যদি বাংলাদেশের মেশিনারিজ তৈরি করা যায়, ওই ধরনের প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ নিয়ে যদি চাইনিজরা বাংলাদেশে আসেন তাহলে একই সঙ্গে আমাদের বিনিয়োগ পাওয়া হবে এবং সেই সঙ্গে চাইনিজ প্রযুক্তির সঙ্গেও পরিচিতি লাভ করতে পারবো।”
আইসিটি উদ্যোক্তা আলমাস কবির বলেন, “তাদের কাছ থেকে টেকনোলজি, হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার সবই আনবো কিন্তু সেটা যখন বাংলাদেশের বাস্তবায়ন করবো তখন যেন আমাদের কোম্পানিগুলো, আমাদের ছেলেমেয়েরা, আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা সেখানে জড়িত থাকে। শতকরা ৬০ শতাংশ যেন লোকাল অংশগ্রহণ থাকে।”
প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপাদান আমদানিতে নীতিসহায়তা দরকার বলছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।
এএইচ
আরও পড়ুন