নারীকে সহিংসতা থেকে যেভাবে রক্ষা করবে মোবাইল অ্যাপ
প্রকাশিত : ০৮:২২, ৩ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ০৮:৫৮, ৩ অক্টোবর ২০১৮
সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের কোনও একটি বাটন চাপ দিলেই বিপদের সময়ে বার্তা চলে যাবে কোনও বন্ধু অথবা জরুরি সাহায্য সংস্থার কাছে- স্মার্ট-ফোনের যুগে এমন বহু অ্যাপ ইতিমধ্যেই নানা দেশে চালু আছে।
মূলত নারীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এ সব অ্যাপ বেশি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এখন পরীক্ষামূলকভাবে দেখার চেষ্টা চলছে প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়, তা রোধ করা যায়, অথবা সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুর জন্য পরবর্তীতে দরকারি চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা কিভাবে দ্রুত পাওয়া যায়।
অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন বগুড়া ও নরসিংদী জেলার ১৬টি ইউনিয়নে এমন একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে - যার মাধ্যমে দেখা হচ্ছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রযুক্তিকে কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত তারা ১৩৪ জনকে এ ধরনের সহায়তা দিয়েছেন।
তিনি জানান, নারী ও মেয়ে শিশুদের প্রতি সহিংসতা দূর করতে একটি হেল্প ডেস্ক ও হেল্প লাইন চালু, ই-ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান, সহিংসতার ঘটনায় একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি- এ সব কাজ করা হচ্ছে। এ সবই করার চেষ্টা চলছে মোবাইল ফোনের একটি অ্যাপের সাহায্যে সংযোগ তৈরির মাধ্যমে।
সেলিনা আহমেদ বলেন, ‘যেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা একটি অ্যাপে কীভাবে নির্যাতন ঘটেছে, কোথায় ঘটেছে, নাম কী সে সব বিস্তারিত রেকর্ড করছে। তখন এ সব তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে হেল্প ডেস্কের কাছে চলে আসছে। হেল্প ডেস্ক তখন তাৎক্ষণিকভাবে ওই নারী যে ধরনের সেবা দরকার সেটি পেতে তাকে সহযোগিতা করছে।’
এমন একটি হেল্প ডেস্কের অফিসার মুসাম্মৎ মিতু খাতুন। তিনি বলছিলেন, শুধু স্বেচ্ছাসেবীদের কাছেই এই অ্যাপটি রয়েছে। তিনি জানান, এর মাধ্যমে কোন কোন জায়গায় নারীর ওপর সহিংসতার আশঙ্কা আছে সে সব সম্পর্কেও আগেভাগে তথ্য পাওয়া সম্ভব।
কীভাবে সেটি হচ্ছে তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবীরা গ্রামের নানা বাড়িতে যান। তখন যদি দেখেন যে কোনও বাড়িতে সমস্যা আছে, তখন তিনি সেটি অ্যাপের মাধ্যমে জানিয়ে দেন। তখন ওই বাড়িটার ওপর নজর রাখা হয়।’ তিনি জানান, তখন তারা আগে ভাগে ওই বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন।
মুসাম্মৎ মিতু খাতুন বলছেন, ‘কদিন আগে আমার কাছে একজন ফোন দিয়ে জানিয়েছিল যে গ্রামের এক লোক তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টার করছে। তখন আমরা তাকে আইনি সহায়তার পাওয়ার উপায় বলে দিয়েছিলাম।’
এখনও পর্যন্ত এই কাজ চলছে খুব স্বল্প পরিসরে। অর্থাৎ মোটে ১৬ ইউনিয়নে। অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ বলছেন, আপাতত শুধু তাদের স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে অ্যালার্ট তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এই অ্যাপটি যেন এক সময় গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে সবার হাতে পৌঁছায় সে জন্যই তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
সূত্র: বিবিসি
একে//
আরও পড়ুন