মি-টু’র ঝড় গুগলেও, যৌন হয়রানির দায়ে ছাটাই ৪৮
প্রকাশিত : ১১:৫৫, ২৭ অক্টোবর ২০১৮
নারীর প্রতি যৌন হয়রানির প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে চলছে ‘মি-টু’ ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিত্তিক এই ঝড় আঘাত করেছে টেক জায়ান্ট গুগলকেও। মি-টু সহ যৌন হয়রানির অভিযোগ আসায় ৪৮ কর্মীকে ছাটাই করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাদ যায়নি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারাও।
সম্প্রতি এক খোলা চিঠিতে এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই। বরখাস্ত হওয়া ৪৮ কর্মীর মধ্যে সিনিয়র ম্যানেজার পদের কর্মকর্তা আছেন অন্তত ১৩ জন।
পিচাই জানান, কর্তৃপক্ষস্থানীয় কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠলে ‘যথেষ্ঠকট্টর অবস্থান’ নেওয়া হবে বলে ঠিক করেছে গুগল।
সম্প্রতি এক মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গুগলের কর্মী অ্যান়ড্রয়েড-স্রষ্টা অ্যান্ডি রুবিনের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও সংস্থা ছেড়ে যাওয়ার সময়ে নয় কোটি ডলারের প্যাকেজ পেয়েছেন। আর তা থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। ওই প্রতিবেদন দেখে পিচাই ছাড়াও গুগলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলিন নটন জানিয়েছেন, তাঁরা এর সঙ্গে একমত নন। তাঁদের দাবি, ‘‘যৌন হেনস্থা বা অশালীন আচরণের প্রত্যেকটি অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয় এবং আমরা ব্যবস্থা নিই।’’
বস্তুত ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই সিইও সুন্দর তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের একটি খোলা চিঠিতে জানিয়েছেন, গুগল থেকে ৪৮ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছিল যৌন হেনস্থার অভিযোগে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আরও জানান, কর্মস্থলে সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সবার কাজ করার মতো উপযুক্ত পরিবেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর গুগল। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘‘যৌন হেনস্থার অভিযোগে কারও চাকরি গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাতে কোনও আর্থিক প্যাকেজ না পান, সেটাও দেখা হয়।’’
তা ছাড়া, খেয়াল রাখা হয় অভিযোগকারীর কথাও। পিচাইরা বলেছেন, ‘‘আমরা জানি হেনস্থার অভিযোগ জানানো কতটা আতঙ্কের বিষয়। সে জন্য আমরা গোপনীয়তা রক্ষার দিকে নজর দিই। যাঁরা প্রকাশ্যে এসে অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সমর্থন এবং সম্মান রয়েছে। কেউ যদি নাম প্রকাশ না করে অভিযোগ জানাতে চান, তাতেও সায় রয়েছে আমাদের।’’ পিচাই-ইলিনের বার্তা, ‘‘গুগল এমন একটা কাজের জায়গা নিশ্চিত করতে চায় যেখানে আপনি সুরক্ষার পরিবেশে নিজের সেরাটা দিতে পারেন। কেউ অনাকাংখিত আচরণ করলে তার ফল হবে গুরুতর।’’
মার্কিন দৈনিকটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুগলের দুই কর্মীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ২০১৩ সালে একটি হোটেলের ঘরে এক মহিলা কর্মী যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছিলেন। সংস্থার তদন্তে সে অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হওয়ায় আগেকার সিইও ল্যারি পেজ ইস্তফা দিতে বলেন অ্যান্ডি রুবিনকে। তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায়নি গুগল। তবে রুবিন যৌন হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় গুগল ছেড়ে চলে যান।
সূত্রঃ আনন্দ বাজার
//এস এইচ এস//
আরও পড়ুন