ক্যানসার প্রতিরোধক ‘লাল ভুট্টা’ উদ্ভাবন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর
প্রকাশিত : ১৫:৪৭, ২১ জানুয়ারি ২০১৯
সাধারণ ভুট্টার সঙ্গে জিনগত পরিবর্তন করে বিভিন্ন রং তৈরি করে এর জেনিটিক্যালি মডিফাইড করে ‘রঙিন ভুট্টা’ উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশি জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী। লভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার এই কৃতী সন্তান গতকাল রোববার এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে হাফিজা-১, জালালিয়া, তানহা ও ডুম- এই চার জাতের ধানের উদ্ভাবন করেন এই বিজ্ঞানী।
ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টায় পুষ্টিমাণ অনেক বেশি। ভুট্টায় ক্যারোটিন থাকার কারণে মূলত এর রং হলুদ হয়। তাই আমি রঙিন ভুট্টার ক্লোন উদ্ভাবন করেছি। তাৎপর্যের বিষয় হলো, এই ভুট্টা ক্যানসার প্রতিরোধক।
বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজ করার অনুমতি পেয়েছেন। এই গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি দেশে বরাবর আবাদ হয়ে আসা ভুট্টার জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে রঙিন ভুট্টার প্রজাতি উদ্ভাবন করেছেন।
এই জিন বিজ্ঞানী জানান, নব উদ্ভাবিত এই রঙিন ভুট্টা বছরে চারবার চাষ করা যায়। আবার খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমেও ভুট্টা চাষ করা যায়। হাইব্রিড ভুট্টা একটি পদ্ধতির মাধ্যমে বেরিয়ে আসতে পারে। বেরিয়ে আসা ভুট্টার ফলন হবে হাইব্রিডের সমান। কৃষকদের এই ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি কুলাউড়া উপজেলার ভুট্টা চাষিসহ সফল কৃষকদের মাঝে ভুট্টার বীজ বিতরণ করেন।
আবেদ চৌধুরী একজন জিন বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান লেখক। আধুনিক জীববিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় প্রথম সারির গবেষকদের অন্যতম একজন। পাশাপাশি কবিতাও লেখেন। ড. আবেদ চৌধুরী ১৯৮৩ সালে পিএইচডি গবেষণাকালে রেকডি নামের জেনেটিক রিকম্বিনেশনের একটি জিন আবিষ্কার করেন, যা নিয়ে আশির দশকে আমেরিকা ও ইউরোপে ব্যাপক গবেষণা হয়। বাংলাদেশের গর্ব এই বিজ্ঞানী-গবেষক অযৌন বীজ উৎপাদন (এফআইএস) সংক্রান্ত তিনটি নতুন জিন আবিষ্কার করেন, যার মাধ্যমে এই জিনবিশিষ্ট মিউটেন্ট নিষেক ছাড়াই আংশিক বীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়। তার এই আবিষ্কার অ্যাপোমিক্সিসের সূচনা করেছে, যার মাধ্যমে পিতৃবিহীন বীজ উৎপাদন সম্ভব হয়।
উপজেলা পরিষদের আয়োজনে এই সভায় স্থানীয় সফল কৃষক, সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একে//
আরও পড়ুন