ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

করোনায় বেঁচে থাকতে করণীয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪৫, ৫ আগস্ট ২০২১

Ekushey Television Ltd.

লকডাউন উঠে যাবে হয়ত কয়েকদিন পরই। কেন উঠবে সেটাও পরিষ্কার। হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে। লকডাউন রাখা হয়েছিল ভাইরাসটা যেন ধীরে ছড়ায়, ততদিনে যেন ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, পুরো পৃথিবীর ৭০০ কোটির সবার হাতে হাতে এই ভ্যাক্সিন পৌঁছাতে, কম করে হলেও ৩-৪ বছর লাগবে। তাই এমন অনন্তকাল লকডাউন রাখা সম্ভব না, সে যত উন্নত রাষ্ট্রই হোক না কেন। চীন, ইতালিতেও উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে লকডাউন।

তবে আমরা কি এভাবেই মরব?

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, হ্যাঁ এবং এটা একদমই প্রাকৃতিক ব্যাপার। প্রতিটা যুগে যুগে এমন ইভ্যুলেশন হয়েছে। এক যুগে 'ডাইনোসর' ছিল, কিন্তু প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারেনি বলে তারা আজ নেই। অথচ সেই জুরাসিক যুগের 'তেলাপোকা' এখনো টিকে আছে। কারণ সে নিজেকে ইভলভ করে, নিজেকে চেঞ্জ করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পেরেছে। ম্যামথও ছিল তখন, হয়ত 'ম্যামথ' তার রূপ চেঞ্জ করেই বর্তমানের হাতি হয়েছে। এগুলাই ইভ্যুলেশন, তো এগুলো বলার মানে কী? এগুলো জেনে কী করব?

আমাদেরও প্রকৃতির উপাদানের সাথে ইভলভ হতে হবে। লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আমাদের নিজেদেরও চেঞ্জ হতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই টিকে থাকা সম্ভব।

১) অভ্যাসঃ
বাজে অভ্যাসগুলা ত্যাগ করতে হবে। কথায় কথায় মুখে আঙুল দেয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় লাগিয়ে কাগজ উল্টানো, থুতু দিয়ে টাকা গোনা ইত্যাদি যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সাথে মাস্ক পড়তে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ২০০৩ এ জাপানে সার্স ভাইরাসের মহামারির পর তাদের মধ্যে এই অভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছিল, যা আজ খুব ভাল কাজ করছে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে। ধূমপান যথাসম্ভব পরিহার করা।

২) এনভায়রনমেন্টঃ
আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা এমন পরিবেশে আছি। নয়ত এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশ কবেই শেষ হয়ে যেত। আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা খুব ভালো কাজ করছে। আর্দ্রতা বেশি থাকা মানে বাতাসে ধুলাবালি কম উড়বে। শীতে আর্দ্রতা কম থাকে, চারিদিক শুষ্ক থাকে বলে বেশি ধুলা ওড়ে। এজন্য শীতপ্রধান দেশে এই ভাইরাস হানা দিচ্ছে বেশি। তাই ঠান্ডা/এসি এভোয়েড করতে হবে, এসি রুমের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়।

৩) ইমিউনিটিঃ 
এটাই মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট। এই পুরো পোস্ট লিখার পেছনে এই পয়েন্টটাই দায়ী। হার্ড ইমিউনিটির বিকল্প নাই। আমাদের ইমিউনিটি বুস্ট করতেই হবে। সেটা কীভাবে? ফিজিক্যালি এন্ড মেন্টালি।

ফিজিক্যালিঃ

* নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে, রাত জাগা খুব খারাপ শরীর ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
* প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে, প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। মাসল এক্টিভিটি বাড়াতে হবে।
* প্রায়ই রোদে ঘুরতে হবে ছাদে। রোদ দরকার, ভিটামিন ডি লাগবেই লাগবে।

খাবারঃ

• ভাতে কোন ঘোড়ার আন্ডার পুষ্টিও নাই, উল্টা অতিরিক্ত ভাত খেলে আপনি মোটা হবেন। ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।
• প্রচুর পানি খেতে হবে (এটা খুব বাজে অভ্যাস আমরা পানি খেতে চাই না)।
• এন্টি অক্সিডেন্ট-যুক্তখাবার খেতে হবে। শাক সবজি খেতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে বাজারে যান, নয়ত ইমিউনিটির অভাবে এমনিও মরতে হবে।
• ভিটামিন সি বা টকযুক্ত ফল, কমলা, লেবু খেতে হবে। এছাড়াও সিজনাল ফল খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে লেবু সিদ্ধ গরম পানি খান।
• ফাস্ট ফুড টোটালি অফ, চিনি কিংবা লবণ খাওয়াও কমাতে হবে।
• আমাদের দেশের মশলাগুলো দারুণ কাজের। লবঙ্গ, জিরা, হলুদ, দারুচিনি এইগুলো মারাত্মকভাবে ইমিউনিটি বুস্ট করে। দুধে হলুদ মিশিয়ে খাবেন, হলুদ অনেক কাজের। চায়ে মশলা মিশিয়ে খাবেন। গ্রিন টি (এন্টিঅক্সিডেন্ট) বেস্ট, গ্রিন টিতে এই মশলাগুলো খেলে অনেক ভালো।
• কালোজিরা কার্যকরী একটা জিনিস। প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে এক চামচ মধুর সাথে কালোজিরা অনেক বেটার একটা কম্বিনেশন। এছাড়া কালোজিরা ভর্তা/ভাজি খাবারের সাথেও খেতে পারেন।

মেন্টালি:
ইমিউন বুস্টের জন্য সঠিক হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা খুব জরুরি। তাই মনকে শান্ত রাখতে হবে, হাসি খুশি থাকতে হবে। ধর্মীয় প্রার্থনায় মন দিন, মন সুন্দর থাকবে। সবাই ভাল থাকুক, সবাই সুস্থ থাকুক। সবাইকে নিয়েই বাঁচতে চাই। বাকিটুকু ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দিলাম।

লেখাটি একজন ডাক্তারের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি