ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে ছড়ায় মিথ্যাচার-গুজব

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১৩:৩৩, ৩ আগস্ট ২০২৪

বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত দেশে-বিদেশে রটানো হয়েছিল মিথ্যাচার-গুজব। এসবের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিপথগামী কয়েক কর্মকর্তার লবিস্ট আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকেও প্রভাবিত করেছিল বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায়।

সদ্য স্বাধীন দেশে সর্বহারা পার্টির সদস্যদের অস্ত্র ফেরত না দিয়ে অরাজকতা, লুটপাট আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের লাগাম টানতে গঠন করা হয় রক্ষীবাহিনী। তবে এই বাহিনী আর বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নামে জাসদের আজ্ঞাবহ দৈনিক গণকণ্ঠ। 

কখনও গোপনে কখনও প্রকাশ্যে- কেবল বিরুদ্ধাচরণই নয় ঔদ্বত্যপূর্ণ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে কয়েক ব্যক্তি ও দল। তাদেরই ধারাবাহিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রপাগাণ্ডার শিকার হন শেখ কামাল, ফজলুল হক মণিসহ সেরনিয়াবাত পরিবারের সদস্যরাও।

সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, “তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিলনা, তখন এরকম মিডিয়া ছিল যে মিডিয়াগুলোর কাজই ছিল প্রপাগান্ডা করা। শেখ কামালের যে গাড়ি ছিল সেটাকে সর্বহারাদের গাড়ি মনে করে পুলিশ গুলি করে। মানুষের মধ্যে গুজব ছড়ানো হলো শেখ কামাল বাংলাদেশ ব্যাংকে ডাকাতি করতে গিয়ে আহত হয়েছে। এই গুজবের চূড়ান্ত রূপ এসে দাঁড়িয়েছিল ১৪ আগস্টের দিবাগত রাত, তারিখ হিসেবে ১৫ আগস্ট।”

এমনকি মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নিয়েও ভূয়া তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হয় জনমনে। বঙ্গবন্ধুর অনন্য ব্যক্তিত্ব-ভাবমূর্তিকে হেয় করতে টার্গেট করা হয় রাষ্ট্রীয় নীতি-সিদ্ধান্তগুলো। ভুল ও বিকৃতভাবে ব্যাখা করে সাধারণের ভেতর তৈরি করা হয় ক্ষোভ-বিদ্বেষ। 

জাহিদ নেওয়াজ খান আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম মিথ্যাচারটা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে ২৫ বছরের চুক্তি হয়েছিল এটা। এটা কিন্তু প্রকাশ্য চুক্তি, এর এ-টু-জেট সবাই জানে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে বলা হলো এটা ২৫ সালা গোলামী চুক্তি, গোপন চুক্তি। তবে সেই চুক্তি গোপন কিছু ছিলনা।”

এসবকে পুঁজি করে কর্ণেল ফারুকসহ পাকিস্তানপন্থি সেনা কর্মকর্তারা শেষ পেরেক হিসাবে ‘রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে’-এমন গুজব রটায় মুক্তিযোদ্ধা-সৈনিকদের মধ্যে। 

এই সাংবাদিক বলেন, “বালুঘাটে মেজর ফারুক-রশীদরা তাদের বাহিনীকে ফলইন করালো তার আগে মেজর ফারুক এভাবে বক্তৃতা করেছিল যে, আগামীকাল ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে রাজতন্ত্র ঘোষণা করবেন। এর মানে হচ্ছে যে, সে তার সৈনিকদের এমনভাবে মোটিভেট করার চেষ্টা করেছিল মিথ্যাকথা বলে, গুজব দিয়ে, প্রপাগান্ডা দিয়ে। এর মাধ্যমে তাদেরকে মোটিভেট করে এবং তারা ৩২ নম্বরের দিকে এগিয়ে আসে।” 

সদ্য স্বাধীন কিন্তু বিধ্বস্ত দেশটি যখন স্থিতিশীলতার পাশাপাশি উন্নয়নের পথে, তখনই ভিন্নপথ বেছে নেয় দুষ্কৃতিকারিরা। রক্তে কেনা প্রিয় মাতৃভূমি আবারও বৃত্তবন্দি হয় অন্ধকারের ঘেরাটোপে-এমনই মনে করেন এই  সাংবাদিক।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি