ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নীল নক্শা হয় কুমিল্লায়

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১৪:৪১, ৪ আগস্ট ২০২৪ | আপডেট: ১৪:৪৫, ৪ আগস্ট ২০২৪

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার নীল নক্শা করা হয় কুমিল্লায়। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি থেকেই দেশী-বিদেশী সব ষড়যন্ত্রে ১৫ই আগস্টকে বেছে নেয় হত্যাকারিরা। হেনরি কিসিঞ্জার থেকে পাকিস্তান আর সেখান থেকে কুমিল্লায় হত্যাকাণ্ডের জাল বুনতে থাকেন মোশতাক-তাহের-চাষী গং। 

বিশিষ্টজনরা বলছেন, ১৫ই আগস্টের আগে-পরের সব ঘটনা উন্মোচনে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। 

স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশের মহান স্থপতিকে হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়েছিল গোটা বিশ্ব। মুজিবনগর সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন ঘটে ১৫ আগস্টে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড বিপথগামী সেনা কর্মকর্তাদের আকস্মিক আক্রমণ ছিল না। বরং স্বাধীন দেশকে বিপদে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন এবং জিয়া-মোশতাকের ক্ষমতায় আসার সিঁড়ি। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “কুমিল্লা বার্ডে খন্দকার মোশতাকের যাওয়া-আসা, একজন মন্ত্রী বার বার কেন বার্ডে যাবে। কুমিল্লা বার্ডে যেতে হবে এই কারণে সেখানে মাহবুব আলম চাষী এবং সে মিলে ষড়যন্ত্র করে। এই হত্যাকারীরা তো দেশ শাসন করেছে।”

কেবল কুমিল্লার বার্ডে নয়- পুরাতন এয়ারপোর্ট, বালুঘাটের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্রকারিদের অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সে সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। ১৯৭৪ সালে কিসিঞ্জার এবং জুলফিকার আলীর ভুট্টোর বাংলাদেশ সফরের পরেই আরও রসদ পায় হত্যাকারিরা। 

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “হেনরি কিসিঞ্জার যখন হোটেল ইন্টারকন্টিনালে এক সংবর্ধনায় উপস্থিত তখন জানা যায় সেখানে অল্প সময় হলেও খন্দকার মোশতাক দেখা করে।”

পাকিস্তান সরকারের পররাষ্ট্র দফতরের হয়ে আমেরিকায় কাজ করা মাহবুবুল আলম চাষী ১৯৭১ সালে কোলকাতায় তাহেরউদ্দীন ঠাকুর এবং খন্দকার মোশতাকের সাথে মুজিবনগর সরকারে কাজ করে। স্বাধীনতার পর ডেপুটি স্টাফ অব আর্মি জেনারেল জিয়াউর রহমানের সাথে আঁতাত করে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য আরও বলেন, “১৪ আগস্ট রাতেও কিন্তু কুর্মিটোলার বিমানবন্দরে বসে সেনা সদস্যরা তাদের কর্মকাণ্ড ঠিক করে। কে কোথায় যাবে, কে শেখ ফজলুর মণির বাসায় যাবে, কে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাসভবনে যাবে।”

জাতির পিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাই শুধু নয়- এই হত্যা বাংলাদেশকেই হত্যার নামান্তর বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। 

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়। তিনি সরকার প্রধান, তিনি রাষ্ট্রপ্রধান, একইসঙ্গে তিনি জাতির জনক, এই দেশটিকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি কিন্তু কোনো সাধারণ বিষয় নয়।”

ইনডেমনিটি বিল দাতাসহ ১৫ই আগস্ট ষড়যন্ত্রের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠনের দাবিও জানান তিনি।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি