ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সূচনা হয় কালো অধ্যায়ের (ভিডিও)

শাকেরা আরজু

প্রকাশিত : ১১:০৩, ৭ আগস্ট ২০২১

জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বিচারকে রুদ্ধ করতে মুশতাক-জিয়া চক্র জারি করে ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণার লংঘন করে এভাবে বিচারের পথ রুদ্ধ করার নজির আর দ্বিতীয়টি নেই। যতদিন পৃথিবী থাকবে মুশতাক ও জিয়ার নাম বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের মতই ইতিহাসে উচ্চারিত হবে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। কুখ্যাত ইনডেমনিটি বাতিলের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের দুয়ার খুলে বলে মন্তব্য তাদের। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে সূচনা হয় কালো অধ্যায়ের। 

পঁচাত্তরের ১৬ আগস্ট জারি করা হয় সামরিক আইন। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধান স্থগিত করে ক্ষমতা নেন খন্দকার মোশতাক। আর জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাকারীরা আশ্রয় নেন বঙ্গভবনে। প্রতিরক্ষা প্রধান করা হয় জেনারেল খলিলকে। আর সেনাপ্রধান হন জেনারেল জিয়া।

ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে ৪২ দিনের মাথায় ২৬ সেপ্টেম্বর জারি করা হয় ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ। খন্দকার মোশতাক স্বাক্ষরিত এই অধ্যাদেশে বলা হয়, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটুক না কেন এব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টসহ কোন আদালতে মামলা বা আইনি প্রক্রিয়া চালানো যাবে না। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব এম এইচ রহমানের সাক্ষরে জারি হয় প্রজ্ঞাপন।

জেনারেল জিয়ার শাসনামলে ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই বিএনপির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজ সংসদে উত্থাপন করেন পঞ্চম সংশোধনী। এর আওতায় ৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ৭৯-এর ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জারিকৃত রাষ্ট্রপতির সকল আদেশকে বৈধতা দিয়ে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৮ অনুচ্ছেদে যুক্ত করা হয়।     

দীঘ ২১ বছর পর সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করে সরকার গঠন করলে ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি বাতিল করা হয়।

এই দায়মুক্তির জন্য মোশতাক-জিয়ার নাম মীরজাফরের মতই ইতিহাসে উচ্চারিত হবে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।ৎ

আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১৫ আগস্টের পর জিয়া ক্ষণে ক্ষণে বঙ্গভবনে গমন করতো এবং অন্যান্য খুনিদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। 

ইনডেমিনিটি বাতিলের পর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পায়। খুলে যায় ন্যায় বিচারের পথ। জাতীয় চার নেতা হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়। 

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বিএম খায়রুল হক বলেন, ফান্ডামেন্টাল রাইট, বেসিক হিউম্যান রাইটস এবং রুল অব ল’ এসবগুলোরই ভায়োলেটই হচ্ছে দ্যাট ভেরি ইনডেমিনিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৫। এটা কনস্টিটিউশনের পার্টই হয়ে গেল কিন্তু পরবর্তীকালে অ্যাপিলেট ডিভিশন বলেছে যে, না কনস্টিটিউশনের পার্ট হয়নি। এটা কনস্টিটিউশনের ভ্যালিলিটি দেয়া হয়েছিল বটে কিন্তু কনস্টিটিউশনের পার্ট কখনই হয়নি।
        
বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার হলেও ষড়যন্ত্রের পেছনের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের দাবি এই আইনজ্ঞদের।

ভিডিও-

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি