ভুট্টো-কিসিঞ্জারের সফরই ছিলো বঙ্গবন্ধু হত্যার সবুজ সংকেত (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১০:৫৯, ৪ আগস্ট ২০২১ | আপডেট: ১১:০১, ৪ আগস্ট ২০২১
পাক-মার্কিন চক্র ও দেশীয় অনুচরদের নীলনকশায় সপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ভুট্টো-কিসিঞ্জারের বাংলাদেশ সফরই ছিলো বঙ্গবন্ধু হত্যার সবুজ সংকেত। হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহখানেক আগে ঢাকায় সিআইএর স্টেশন চিফ ফিলিপ চেরির সঙ্গে বৈঠক করেন জেনারেল জিয়া। খুনিদের স্বীকারোক্তিতেও এসেছে জিয়া ও মোশতাকের নাম। ’৭৫ এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনেন জেনারেল জিয়া।
সোনার বাংলা গড়তে যুদ্ধজয়ের মন্ত্র দিয়ে শোষিত বাঙালিকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি শপথ নেয়ার মাত্র নয় মাসের মাথায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মানুষকে উপহার দেন প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ দলিল সংবিধান। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন জাতিকে।
শুধু বিজ্ঞানভিত্তিক-ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন শিক্ষাই নয়, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় সাংবিধানিক ভাবে। দালাল আইন জারি করে পাকিস্তানি দোসর রাজকার, আলবদরদের বিচার শুরু হয়।
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন জাতির পিতা। ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় দলীয় শাসন ব্যবস্থার সমান্তরালে প্রবর্তন করেন সমবায়মুখী গণতন্ত্রের মডেল। শুরু হয় দ্বিতীয় বিপ্লব।
বাঙালির ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ এবং সমাজতন্ত্রমুখী অভিযাত্রা শুরু থেকেই মেনে নিতে পারেনি মার্কিন নয়া-উপনিবেশবাদীরা। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই মোশতাকের মাধ্যমে বাংলাদেশ-পাকিস্তান কনফেডারেশন চুক্তি চেয়েছিল কিসিঞ্জার-ভুট্টো। দেশ স্বাধীনের পরও জারি ছিল সেই অপচেষ্টা।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবেদ খান বলেন, অনেকগুলো চক্র তাঁকে ঘিরে ছিল, তাঁকে বন্দি করে রাখছিল। অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য মানুষগুলোর সঙ্গে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা, যাতে তিনি একক হয়ে যান এবং তাঁর অর্থনৈতিক দিকটা পঙ্গু করে দেয়ার চেষ্টা। এরপর সরাসরি তাঁর উপর আক্রমণের চেষ্টা।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় ছদ্মবেশে থাকা খন্দকার মোশতাক আহমেদের নীল নকশা বাস্তবায়নে শরীক হন অনেকেই।
আবেদ খান আরও বলেন, সাপের মতো অবস্থান যার ছিল সেই হচ্ছে খন্দকার মোশতাক এবং তার গং। তিনি মোশতাককে বুঝেছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে তার নিজস্ব জবানীতে আছে যে, এই লোকটিকে দেখছো- এই লোকটিই এক সময়ে আমার ঘাতক হবে। খন্দকার মোশতাকই কিন্তু পরিষ্কারভাবে ব্লু প্রিন্টের ভেতর দিয়ে কাকে কাকে হত্যা করতে হবে, কিভাবে শেষ করতে হবে এগুলোর ব্যবস্থা করেছিল সে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়েই শুরু হয় পাকিস্তানী ভাবধারার অনুপ্রবেশ।
সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, পুরো রাজনীতির ধর্মটাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা যদি হিসাব করি তাহলে দেখবো যে, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৩২ বছর বাংলাদেশটাকে শাসন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সংবিধানের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ফিরে আসলেও এখনো জারি আছে অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন সমাজের লড়াই।
ভিডিও-
এএইচ/
আরও পড়ুন