ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

কেজিবি, সিআইএ, র এবং ‘বিষ’ ওড়ানো বিদেশি গণমাধ্যম

শেখ সাদী

প্রকাশিত : ০৯:১৬, ১০ আগস্ট ২০২২

১০ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনটি ছিল রবিবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন।

পাকিস্তান সময় থেকে এই ছুটি বহাল ছিল। আজ বাকশালে যোগ দেয় সরকারি কর্মচারী পরিষদের তিন লাখ ৫০ হাজার সদস্য।

বিদেশি গণমাধ্যমে চক্রান্তের বিষ 

১৫ আগস্টের নৃশংসতার আগে থেকেই দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ’ইমেজ’ নষ্টের চক্রান্ডের বিষ ওড়ানো হয়।

১৯৭৪। ১৮ এপ্রিল। পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে ভুট্টো বলছিলেন, 'এ উপমহাদেশে শীঘ্রই কিছু পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। '

১৯৭৪। ৬ জানুয়ারি। লন্ডনের 'ডেইলি টেলিগ্রাফ ' পত্রিকায় পিটার জিল শেখ মুজিবকে রাজা কানিউটের সাথে তুলনা করে বলেছেন, তিনি অযোগ্য।তাঁর শাসন থেকে বাংলাদেশ যত তাড়াতাড়ি মুক্ত হয় তত ভাল। He is the best liability of Bangladesh।

১৯৭৫। ৮ মার্চ। লন্ডনের 'টাইমস' পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়, 'এশিয়ার সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নেতা হচ্ছেন দু'জন। চৌ এন লাই এবং জুলফিকার আলী ভূট্টো। বাংলাদেশ হলো Land of human tragedy।

১৯৭৫। ১০ মার্চ। লন্ডনের 'ইকোনমিস্ট' পত্রিকা 'দি লাস্ট কার্ড অফ শেখ মুজিব' নামক প্রবন্ধে বলেছে, ’একদলীয় শাসনই শেখ মুজিবের শেষ খেলা..।’

৬ জুন। ফিন্যান্সওয়াল টাইমস অফ লন্ডন: ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচনায় কেভিন রাফের্টি লিখলেন ’বাংলাদেশকেযেন কোনভাবেই আর  বৈদেশিক সাহায্য না দেয়া হয়।’ এবং কেভিন আরো লিখলেন,’দেশের মানুষকে ভুগতে দিন। যাতে তারা নিজেরাই শাসকদের উৎখাত করে।’

২৭ জুন। বাংলাদেশে নিযুক্ত হল্যান্ডের চার্জ দ্য এফেয়ার্স মি.পি.আর ব্রাউভার বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা বাংলাদেশের জন্য এক বড় রকমের দুর্যোগ ঘনিয়ে আসছে।’

কেজিবি, সিআইএ, র
কেজিবি। সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা।  কেজিব‘র  তথ্য ভরছে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে তাদের ২০ জন এজেন্ট সক্রিয় ছিল। শুধু তাই নয়, এই ২০ জনের দুজন ছিলেন বঙ্গবন্ধু-মন্ত্রিসভার সদস্য। সেই কেজিবি ১৯৭৫ সালে বলে, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডে সিআইএ সরাসরি জড়িত নয়।

১৯৭৫। সিআইএর পরিচালক ছিলেন উইলিয়াম কলবি। আর, কেজিবির চেয়ারম্যান ইউরি আন্দ্রোপভ। আগস্টের হত্যাকান্ড নিয়ে তারা কিছু বলেনিনি।

তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ প্রধান রমেশ্বর নাথ কাও  ১৯৮৯ সালের ‘সানডে’ ২৩-২৯ এপ্রিল সংখ্যায়  জানালেন, ‘আমি নিজে ঢাকায় এসে মুজিবকে এ ষড়যন্ত্রের খবর দিয়েছি। কিন্তু মুজিব সেটি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘ওরা আমার সন্তান। আমার কোনো ক্ষতি ওরা করবে না।’

কাও আরও লিখেছেন, ‘প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আমার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে মার্চ ১৯৭৫-এ আমি ঢাকায় পাঠাই। শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে তিনি জানান যে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া ও গোলন্দাজ অংশের দুটি ইউনিটে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এসব সতর্কবার্তায় তিনি কান দেননি।’

ষড়যন্ত্রের খবর কাও বিস্তারিত জানতেন।  প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী খবরের মাধ্যম জানতে চাইলে  কাও বলেন, ‘এসব তথ্য পাওয়া গেছে নাজুকভাবে রোপণ করা এক সূত্র থেকে। যেকোনো মূল্যে তার গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।’ কাও বললেন না খবরের ‘মাধ্যম’।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি