বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পথ হারায় দেশের অর্থনীতি (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:০৫, ১৪ আগস্ট ২০২৩
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের অর্থনীতিতে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। জনবিরোধী শাসকদের ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ চলে যায় মুষ্টিমেয় লোকের হাতে। পথ হারায় দেশের অর্থনীতি। অপমৃত্যু ঘটে বঙ্গবন্ধুর কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের।
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ। চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞ, রাষ্ট্রীয় তহবিল প্রায় শূন্য। এমন বাস্তবতায় ১৯৭২ সালে দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে একটা কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে পরিণত করার কাজ শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয় দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ ও সমবায় অর্থনীতিও বিশেষ গুরুত্ব পায় তাতে। পাট, চা, চিনি, রেশম, বস্ত্রসহ জাতীয়করণের আওতায় আসে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, “তিনি এই নীতিগুলো গ্রহণ করেছিলেন বলে মাত্র সাড়ে তিনবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে তিনগুন বেড়ে গিয়েছিল। কল্পনা করুন, তিনি যদি আরও ১০ বছর বাঁচতেন এবং এই হারে যদি মাথাপিছু আয় বেড়ে যেতো, শিক্ষার মান যদি আরও বেড়ে যেতো আমরা কিন্তু এই ১০ বছরের মাথাতেই উন্নয়নশীল দেশ হতাম। যেটা আমরা ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হতে যাচ্ছি।”
বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনে সুফলও আসে খুব অল্প সময়ে। কৃষির পাশাপাশি বিকশিত হতে থাকে শিল্পখাতও। পাট ও চা হয়ে ওঠে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম। গতি ফিরে বৈদেশিক বাণিজ্যে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধুর অর্থনীতি মানবিক ছিল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, কৃষি বান্ধব এবং শিক্ষাবান্ধব ছিল।”
১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৩ ডলার। আর মাত্র তিন বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭৩ ডলারে। কিন্তু ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার পর পথ হারায় দেশের অর্থনীতি। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ’৭৭-এ মাথাপিছু আয় নেমে যায় ১২৮ মার্কিন ডলারে।
এদিকে, সমবায়ভিত্তিক অর্থনীতির যে যাত্রা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর পর তাও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। জনগণের মালিকানাধীন রাষ্ট্রীয় শিল্পকারখানায় গুটিকয়েক মানুষ প্রাধান্য পায়। সম্পদের সুষম বণ্টন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। চূড়ান্ত অপমৃত্যু ঘটে বঙ্গবন্ধুর কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের।
অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, “আমরা কতগুলো বছর হারিয়েছি বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে।”
এএইচ
আরও পড়ুন