ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

অবহেলা অযত্নে শেরপুরের পশ্চিম ঘাগড়া কুনাপাড়া বধ্যভূমি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৭, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিম ঘাগড়া কুনাপাড়া বধ্যভূমিটি অবহেলা অযত্নে পড়ে আছে। শেরপুর-ঝিনাইগাতী সড়কের কয়ারি রোড় এলাকা থেকে ৫০০ মিটার কাঁচা রাস্তা পেরোলেই এই বধ্যভূমি।

নাম না জানা শত-শত শহীদের স্মরণে এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় বধ্যভূমিটি অযত্নে পড়ে আছে। কোনো নামফলক নেই। ফলে এলাকাবাসী ছাড়া নতুন কেউ বুঝতেই পারবে না এই ঐতিহাসিক বধ্যভূমি এটি। জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী জেলার সবচেয়ে বড় ক্যাম্প স্থাপন করে কয়ারি রোড় এলাকায়। এখানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হতো। ক্যাম্পের পাশেই ছিল টর্চার সেল। যুদ্ধের সময় মানুষের আর্তচিৎকার এখান থেকে ভেসে আসত। ক্যাম্পের ৫০০ মিটার পশ্চিম পাশে ১০ শতাংশ জমিজুড়ে গভীর গর্ত ছিল। যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী অসংখ্য মানুষকে ধরে এই ক্যাম্পে এনে নির্যাতন করে মেরে ফেলত। পরে এই গর্তে মরদেহ ফেলে দিত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রামবাসী এলাকায় ফিরে আসেন। তখন বড় গর্তটিতে অসংখ্য লাশ দেখতে পান তারা। গ্রামবাসী মিলে লাশগুলো মাটিচাপা দেন।

২০০৮ সালে সেনাবাহিনী ১২ শতাংশ এই বধ্যভূমির জমি অধিগ্রহণ করে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে। পাকিস্তানি ক্যাম্পের জায়গায় হাতীবান্দা ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণ করা হয়েছে। টর্চার সেলটিতে এখন ধানের চাতাল করা হয়েছে। ৫০০ মিটার কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে স্মৃতিস্তম্ভের দেখা মেলে। চারপাশে নীরবতা। কোলাহলমুক্ত গ্রামের বাঁশঝাড়ের নিচে শত-শত শহীদের গণকবর। কোনো নামফলক নেই। কাছে গিয়ে কেউ দেখিয়ে না দিলে জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি সম্পর্কে বুঝা যাবে না। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় ১০ শতাংশের স্তম্ভের বেদীটি অযত্নে পড়ে আছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান আকন্দ স্মৃতিস্তম্ভটি সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার দাবি জানান।

এনিয়ে হাতীবান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমীন বলেন, ‘এই বধ্যভূমির কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। এমনকি দেখাশোনার জন্য কোনো কমিটিও নেই। তিনি নিজ উদ্যোগে মাঝে-মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের জন্য ইতিমধ্যে আমরা উদ্যোগ নিয়েছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন প্রজন্ম যেন এই বধ্যভূমির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে, সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহ্বুব বলেন, ‘জেলার সবগুলো বধ্যভূমিকে সংরক্ষণ করার জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’
সূত্র : বাসস
এসএ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি