ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

লাখো মানুষের রক্তনদী পেরিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ (ভিডিও)

প্রণব চক্রবর্তী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৩, ১ ডিসেম্বর ২০২২

বছর ঘুরে আবার এলো বাঙালীর গৌরবের গল্পগাঁথার মাস- ডিসেম্বর। বঙ্গবন্ধুর ডাকে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই নিশ্চিত হয় দখলদার পাকিস্তানের পরাজয়। হানাদারমুক্ত হতে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। বীরদর্পে মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে আসে রাজধানী ঢাকার দিকে। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ে লাল সবুজ পতাকায় বিশ্ব মানচিত্রে আঁকা হয় বাংলাদেশের নাম।

শাসনের নামে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণে নিষ্পেষিত বাংলার মানুষের মনে দানা বাঁধে ক্ষোভের আগুন; দাবি আদায়ে ফুঁসে ওঠা জনগণকে জ্বলে ওঠার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় বাঙালি। সব কূটকৌশল ছিন্ন করে শুরু হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তির যুদ্ধ। গেরিলা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি।

ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন বলেন, “বঙ্গবন্ধু গত শতকে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্ন আমাদের মতো তরুণদের মনে বা তাঁর সমসাময়িকদের মধ্যে সঞ্চারিত করতে পেরেছেন এবং তিনি সেটা কার্যকর করতে পেরেছেন। এখানেই বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু করেছে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন তার তো কোন প্রস্তুতি ছিল না। বাঙালির এই মুক্তির লড়াই বঙ্গবন্ধু শাসনতান্ত্রিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করেছিলেন। এটাই তার শক্তি।”

রণাঙ্গনে গঠিত হলো যৌথ বাহিনী। ছাত্র-জনতার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় গুঁড়িয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানী সেনাদের ঘাঁটি। একের পর এক মুক্ত হয় নতুন নতুন অঞ্চল; পিছু হটে হানাদার সেনারা। মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে আসে ঢাকার দিকে।

ঢাকায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির অফিস বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় মুক্তিকামী বাঙালি। ভারতীয় পার্লামেন্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আহ্বান জানান, পাকিস্তানি সৈন্য সরিয়ে নিতে। অবশেষে দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়। 

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “বহু ঘটনা, বহু নির্মমতা, বহু সংসার তছনছ হয়ে যাওয়া, বহু মানুষের কষ্টভোগ- এসব কিছুর বিনিময়েই তো স্বাধানিতা। সেকারণে ডিসেম্বরে যেমন আমরা বিষন্নতা দ্বারা আক্রান্ত হই, ডিসেম্বরে বিজয়ের আনন্দেও আমরা উদ্বেলিত হই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানবতার জয় ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ।’

বাঙালির বিজয় সুনিশ্চিত জেনে নৃশংস হায়েনার মতো শোষণ, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগে মাতে পাকিস্তানি বাহিনী। বিজয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে হত্যা করা হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। এমনও রক্তভেজা প্রান্তর পেরিয়ে বাংলার আকাশে উঠে স্বাধীনতার লাল সূর্য।

লাখো মানুষের রক্তনদী পেরিয়ে ত্যাগের মহিমায় আসে কাঙ্ক্ষিত বিজয়। যে বিজয় ছিল মূলত মানবতার জয়। আর সেই জয়েই আজকের বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি