ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

জীবন দিয়ে সহযোদ্ধাদের বাঁচান বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল (ভিডিও)

মানিক শিকদার, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

রণাঙ্গণে জীবন দিয়ে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন সাত বীরশ্রেষ্ঠ। অসামান্য অবদানের জন্য সাত সেনা সদস্যকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদকে ভূষিত করে রাষ্ট্র। বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল তাদেরই একজন। জীবন দিয়ে বাঁচিয়ে গেছেন সহযোদ্ধাদের।

১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলার দৌলতখানে জন্ম মো. মোস্তফা কামালের। পিতা হাবিবুর রহমান ছিলেন সেনাবাহিনীর হাবিলদার। পিতার কর্মস্থল কুমিল্লা সেনানিবাসে কেটেছে তাঁর শৈশব কৈশোর। বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে সেনানিবাসে সেনাদের কুচকাওয়াজ, মার্চপাস্টই ভাল লাগতো তাঁর। স্বপ্ন স্থির করেন সৈনিক হবার।

’৬৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ছিলেন চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক। একাত্তরের উত্তাল দিনে পাকিস্তানিরা চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে অভ্যন্তরীণ গোলযোগের অজুহাতে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোতায়েন করে। এ রেজিমেন্টের বেশিরভাগই বাঙালি সেনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয় এই রেজিমেন্ট।     

স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পর ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টার, গানশীপ, নেভাল গানবোট ও বিমানযোগে মুক্তিবাহিনীর ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিরক্ষা অবস্থানের উপর ত্রিমুখী হামলা চালায়। গঙ্গাসাগর প্রতিরক্ষা অবস্থানের দরুইন গ্রামে নিয়োজিত আলফা কোম্পানির ২নং প্লাটুনের একজন সেকশন কমান্ডার ছিলেন মোস্তফা কামাল।

আখাউড়া প্রতিরক্ষা অবস্থানে পাকিস্থান বাহিনী আক্রমণ চালালে দরুইন গ্রামে অবস্থান নেয় ইপিআরের একটি কোম্পানী। ব্রীজ ভেঙ্গে পাকসেনাদের প্রতিরোধ করে মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু পাকবাহিনী গঙ্গাসাগর এলাকা থেকে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে দরুইন গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের চারপাশ ঘিরে ফেলে। এ সময় দরুইন গ্রামে বাঙ্কার খুঁড়ে মোস্তফা কামাল ও তার সহযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যান। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, “তিনি এলএমজি দিয়ে একা পাকিস্তানী এক কোম্পানির সৈন্যদের প্রতিহত করেন। এই ফাঁকে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সব সৈনিকরা পিছিয়ে আত্মরক্ষা করেন। একপর্যায়ে মোস্তফা কামালের গুলি শেষ হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে তিনি পরাস্ত হন। বেয়টনের আঘাতে তাকে ক্ষত-বিক্ষত করে হত্যা করে হানাদাররা।

মোস্তফা কামাল ১৮ এপ্রিল শহীদ হন। এরপর আখাউড়ার দরুইন গ্রামে শাহাদত স্থলেই তাকে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তাঁর স্মৃতিরক্ষায় নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি