ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

যেভাবে হানাদারমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:০৪, ৮ ডিসেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১০:৩৭, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

আজ ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদারদের বিতারিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর উপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধে ২০ হানাদার নিহত, ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধে ১১ হানাদার নিহত হয়। এসময়ে শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। এরই মাঝে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।

 ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়ে পড়ে। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর দুই শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়। 

এরপর থেকে চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তিবাহিনীর একটি গ্রুপ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। 

শহরের চর্তুদিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় পাকিস্তানী সেনারা পালিয়ে যাবার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের  কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। 

৭ ডিসেম্বর রাতের আধারে পাকিস্তানী বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। 

৮ ডিসেম্বর বিনা বাধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। 

ওই দিন সকাল ৯টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতার উপস্থিতিতে শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী। 

একই দিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলা শত্রু মুক্ত হয়। 

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড। 

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের উদ্যোগে বেলা ১১টায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ ভাষা চত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও মুক্তিযোদ্ধা মিলন মেলা।

বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কমান্ডের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি