ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

ভাষা আন্দোলনের সূচনা কোথায়?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর থেকেই ভাষা আন্দোলনের সূচনা। পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যখন ঘোষণা করলেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ‘না’ ‘না’ বলে প্রতিবাদ করেছিলো। ধীরে ধীরে আন্দোলনের দাবানাল ছড়িয়ে পড়ে বাংলার গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায়। প্রাণ দিয়ে ভাষার অধিকার আদায় করে বাঙালি। আর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই বপন হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বীজ। 

১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ রেসকোর্স ময়দানে এক সভায় ঘোষণা করলেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা। ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলেও একই ঘোষণা। সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ। 

গঠিত হয় রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এরও কিছু আগে গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান গণপরিষদে উর্দু ও ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান। তার দাবি অগ্রাহ্য হওয়ায় ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 

৫২তে ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার পর আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল। আগেরদিনই ১৪৪ ধারা জারি করে সরকার। তবে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের একাংশে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্রদের সভা হয়। সবার কন্ঠে দৃপ্ত স্লোগান ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’।

এ নিয়ে ভাষা সৈনিক আহমদ রফিক বলেছিলেন, “২১ তারিখ ভোরে আটর্স বিল্ডিং প্রাঙ্গনে সেই সময়ের বিখ্যাত আমতলায় ছাত্র নেতৃবৃন্দের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হলো ১০ জন ১০ জন মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার। মূলত ছাত্র-যুব সমাজ এই আন্দোলনে নেমে পড়ে, তার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ এবং পেশাজীবী, সাধারণ মানুষ, শিক্ষাজীবী, চিকিৎসক, আইনজীবী- এরা তার পেছনে এসে দাঁড়ায়।”

গণপরিষদ ভবনের দিকে এগোতে থাকা মিছিলের উপর পুলিশ গুলি চালায়। 

আহমদ রফিক আরও বলেন, “এখন যেটি জগন্নাথ হল, সেটি ছিল তখন পরিষদ ভবন। উদ্দেশ্য ছিল সেই পরিষদ ভবনের কাছাকাছি পৌঁছানো। পুলিশের বাঁধা অতিক্রম প্রচেষ্টায় পুলিশের গুলিতে ২১ তারিখে প্রথমে রফিক উদ্দিন তারপর আব্দুল জব্বার, তারপর বরকত এবং সালাম শহীদ হলেন।”

৫৪তে এসে দাবি আদায় হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে আন্দোলনের সূচনা- তারই পথ ধরে চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট সরকার, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, মুক্তিযুদ্ধ- একসাগর রক্তে স্বাধীন বাংলাদেশ।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি