ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রাণের মেলায় বইপ্রেমীদের ঢল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৪২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মাত্র একদিন আগে ‘অমর একুশে’র চেতনা উদ্বীপ্ত গণমানুষের বইমেলাই যে ঢেউ লেগেছিলো সেই আবহের জের যেতে না যেতেই  দিন ফুরিয়ে আসছে একুশে গ্রন্থমেলার । আজ ছিলো মেলার ২৩তম দিন, ৬ষ্ঠ শিশু প্রহর এবং শেষ শুক্রবার।  এমনিতেই সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো বইমেলায় লোক সমাগম বেশি হয়, তার উপরে এবারের মেলার শেষ শুক্রবার হিসেবে আজ জনস্রোতের ঢল নেমেছে।  বিকিকিনিও  হচ্ছে আশানুরূপ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব শ্রেণীর পাঠকের সমাগম দেখা মিলেছে মেলাতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছুটির দিন  ও সকালে শিশু প্রহর থাকায় বিকেল ৩টার আগে থেকেই প্রাণের মেলা বইমেলায় (দুই প্রাঙ্গণে) প্রবেশের জন্য উম্মুখ হয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক তরুণ-তরুণীকে। আর তিনটায় প্রবেশপথ খুলে দিলে মুহূর্তেই প্রবেশ করে মেলার ভেতরে। প্রবেশ মাত্রই যে যার পছন্দের বই কিনতে চলে যায় পছন্দের স্টলে স্টলে।

বিকেল আসতে না আসতেই মেলার উভয় প্রাঙ্গণে ভীড় বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে বেচাকেনাও। এ সময় কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার বিক্রয়কর্মী জানালেন, বইয়ের বিক্রি অন্যান্য দিনের চেয়ে ভালো।

বিশেষ দিনগুলোর মতো এখন মেলায় তেমন উপচেপড়া ভিড় না থাকলেও মেলায় ভিড় আছে যথেষ্ট। চলছে প্রকৃত বইপ্রেমীদের হরদম কেনাকাটা, বেড়েছে সব ধরনের বইয়ের বিক্রি। প্রায় সবকটি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে বইয়ের ক্রেতার ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশের হাতেই নতুন বইয়ের প্যাকেট। বই বিক্রিও হয়েছে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে বেশি। জনপ্রিয় কবি-লেখকদের গল্প-কবিতা-উপন্যাস যেমন বিক্রি হচ্ছে তেমনই ভালো বিক্রি হচ্ছে মননশীল বই, প্রবন্ধের বই।

বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীদের  এখন কি ধরনের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলছেন, বিষয়ভিত্তিক বইয়ের কদর দিন দিন বাড়ছে। তেমনি প্রবন্ধ, গবেষণামূলক গ্রন্থের বিক্রিও বেশ ভালো। বিষয়টাকে প্রকাশকরা দেখছেন পাঠকের চিন্তার স্তরের উত্তরণ হিসেবে। তারা আরও বলছেন, প্রকৃত পাঠকরা দেখেশুনে বই কেনার জন্য এই দিনগুলোই বেছে নেয়। এই সময়ে তারা দুই হাতে বই কেনে।

মেলাতে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী দ্বীন ইসলামের সাথে। তিনি একুশে  টিভি অনলাইনকে বলেন, চাকরি করার কারণে সব সময় মেলাতে আসতে পারি না। আজ শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় মেলাতে এসেছি। ইতোমধ্যে  দুইটি বই কিনেছি। পছন্দ হলে আরও কিছু বই নিয়ে যাবে।

সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী করিব আহমেদ একুশে টিভি অনলাইনকে জানান,  লেখাপড়ার পাশাপাশি জব করার কারণে  ইচ্ছা থাকলেও  ছিুটির দিন ছাড়া মেলাতে আসতে পারি না। তাই আজ  ছুটির দিন থাকার কারণে তিন বন্ধু মিলে মেলাতে এসেছি। তিনি আরও জানান,  হুমায়ুন আহমেদের হিমু সিরিজের দশ বইটি নিয়েছি। এছাড়া শরৎচন্দ্র লেখা চরিত্রহীন, শ্রীকান্ত নিয়েছে।  নতুন কিছু লেখকের বই পেলে নিয়ে যাবে।

প্রকাশনা সংস্থা ‘কথা’ প্রকাশের বিপণনের দায়িত্ব পালনকারী মো. ইউনুস বলেন একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, মাত্র দুই দিন আগে ’৫২’তে একঝাক তরুণের রক্তে লেখা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণ-স্বাক্ষর ‘অমর একুশে’ স্মরণে জাতি পালন করলো ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। একুশ মানে মাথানত না করা- এমনই শপথ নিয়েই যেন তারা এসেছিল মেলা প্রাঙ্গণে। মেলায় ঢুকেই তাদের কেউ বই কিনছে, কেউ বই দেখছে। দু’প্রাঙ্গণের এই মেলার চারদিকে ঘুরছে-নির্বিঘ্নে। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশের অধিকাংশ প্রকাশকরা বলছে তাদের বিক্রি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। আমরা আশা করছি মেলার বাকি ক’দিন বিক্রি আরও বাড়বে। তাছাড়া এখন মেলাতে যারা আসছে তারা বই কিনতেই আসছে।

আজ মেলা শুরু  হয় সকাল ১১টায় এবং শেষ হবে রাত ৯টায়। এই সময়ের মধ্যে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকে শুধুই শিশু-কিশোরদের জন্য। এ আয়োজনের পরেই মেলার মূলমঞ্চে সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সংগীত পরিবেশন করেন আলম দেওয়ান, শফিউল আলম রাজা, আঁখি আলম এবং আমজাদ দেওয়ান।

টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি