২৩ মার্চ ১৯৭১
ঢাকা পতাকার নগরীতে পরিণত হয়
প্রকাশিত : ০৮:২৭, ২৩ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ০৮:৫৩, ২৩ মার্চ ২০১৮
২৩ মার্চ। ১৯৭১। বাঙালির জীবনে স্মরণীয় একটি দিন। একাত্তরের এই দিনে বাংলার ঘরে ঘরে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত জাতীয় পতাকা উড়েছিল। প্রতিরোধ দিবস পালন উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানি শাসকদের কেবল বৃদ্ধাঙ্গুলিই দেখায়নি বাঙালি, তারা যে স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর সেটার বহিঃপ্রকাশও ঘটিয়েছিল।
এদিনে ক্যান্টনমেন্টগুলো ছাড়া কোথাও পাকিস্তানি পতাকা ওড়েনি। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ বাসভবনে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে চাই। প্রয়োজনে রক্ত দিতে প্রস্তুত। সাড়ে সাত কোটির একটি আত্মা জীবিত থাকতেও দাবী আদায়ের সংগ্রাম চলবে।
এদিন, ঢাকা পতাকার নগরীতে পরিণত হয়। যানবাহান, দোকানপাট, সরকারী, আধা সরকারী, বেসরকরী ভবনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেলে পশ্চিম পাকিস্তানের ৬জন পার্লামেন্টারি নেতা এদিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন। ইয়াহিয়া খান এদিন প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে যান। বৈঠক করেন লে. জেনারেল পীরজাদার সঙ্গে।
২৩ মার্চ নিয়ে ইয়াহিয়ার উপদেষ্টা জি ডব্লিউ চৌধুরী তার দি লাস্ট ডে’জ অব ইউনাইটেড পাকিস্তান গ্রন্থে লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সৃষ্টির পর ২৩ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয় এবং দিনটিকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হচ্ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকায় দিনটিকে প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কোথাও কোনো পাকিস্তানি পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কোনো সরকারি ভবনে নয়, এমনকি বেসরকারি ভবনেও নয়। কেবল নিঃসঙ্গভাবে দুটি স্থানে ওড়ে এই পতাকা। প্রেসিডেন্ট হাউস, যেখানে সে সময়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অবস্থান করছিলেন এবং প্রাদেশিক সরকারের ভবন। পাকিস্তানি পতাকা কেবল ওড়ানো বন্ধ করা হয়নি, সর্বত্র এই পতাকা পোড়ানো হয় এবং অপমানিত করা হয়। পাশাপাশি সর্বত্র ওড়ানো হয় বাংলাদেশের পতাকা।’ বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের পথে এই দিনটির মাহাত্ম্য অনেক।
এসএ/