ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আজ বিশ্ব সঙ্গীত দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৩, ২১ জুন ২০২০

Ekushey Television Ltd.

সুর-সঙ্গীত কার না ভালো লাগে। শুধু মানুষ নয়, সকল প্রাণী তথা জীবজগৎ কোনো না কোনোভাবে প্রতিনিয়ত সঙ্গীতের আরাধনা করে। আমরা জন্মের পর থেকেই যেকোনো সুরের স্রোতে অবগাহন করি। যা আমাদের মনকে প্রশান্তি দেয়, উদ্যোমতায় আকৃষ্ট করে। সঙ্গীতকে বিশেষভাবে মূল্যায়নের জন্য প্রতি বছর মাত্র একটি দিন বরাদ্দ।

বছরের ২১ জুন বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক সঙ্গীত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। সে অর্থে আজ সঙ্গীতপ্রেমীদের সেই প্রতিক্ষিত দিন। এই দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের শুরুটা হয় ফ্রান্সে। দেশটির একটি ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত উৎসবের নাম ‘ফেট ডে লা মিউজক’। এর বাংলা দাঁড়ায় বিশ্বব্যাপী সঙ্গীতের দিন। বিশেষ এই মিউজিক ফেস্টিভ্যালকে ঘিরে ফ্রান্সে পালিত হয় সঙ্গীতবিষয়ক বৈচিত্র্যময় নানা আয়োজন।

প্রথম থেকেই আলোচিত এই ফেস্টিভ্যালে অংশ নেবার জন্যে হাজির হতো বহু দেশের অসংখ্য সঙ্গীতজ্ঞ। ১৯৮২ সালেই বিশেষ এই সঙ্গীত উৎসবের দিনটি ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে’ হিসেবে সমৃদ্ধি লাভ করে। এর এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৮১ সালে ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক মন্ত্রী জ্যাক লাঙ এই উৎসবকে একটি আন্তর্জাতিক রূপ দেবার চেষ্টা করেছিলেন।

আনুষ্ঠানিক যাত্রার এক বছরের মাথায় ২১ জুনকে বিশ্ব সঙ্গীত দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। ভালো লিরিক আর সুর ছুঁয়ে যায় সংবেদনশীল মানুষের মন। সঙ্গীতের নিজস্বতা আর স্বকীয়তা এতটাই প্রবল যে সেটা কোনো বিশেষ ভাষার কাছেও সীমাবদ্ধ হয়ে থাকেনি। অর্থাৎ কোনো কাঁটা তারের বেড়া সঙ্গীতকে বাধা দিতে পারে না। বিদেশের সঙ্গীতজ্ঞ বব ডিলান কিংবা জিম মরিসনের সঙ্গীত যেমন এদেশের মানুষের মন ছুঁয়েছে, তেমনি আমাদের লালনের গানও পৌঁছে গেছে বিশ্বের দরবারে।

বিশ্ব সঙ্গীত দিবসের আনন্দ আর উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে চলে বিশ্বের একশত আট দেশের পাঁচ শতাধিক শহর-নগরে। কোটি কোটি মানুষ সঙ্গীতকে ভালোবেসে একটি বিশেষ দিবস হিসেবে ২১ জুনকে উদযাপন করে। এদিন বিশ্বজুড়ে আয়োজন করা হয় গানের আসর, শিল্পী সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, কর্মশালা ও নানামুখী সঙ্গীতবিষয়ক অনুষ্ঠানিকতা। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

বিশ্ব সঙ্গীত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদসহ সঙ্গীতের বিভিন্ন সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বর্ণিল আয়োজনে দিবসটি পালন করে। এবার সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের কারণে কোথাও দিবসটি পালিত হচ্ছে না। 

সময়ের হাত ধরে বিশ্ব সঙ্গীতের জগতে বাংলা গান এক বিশেষ স্থানে আসীন হয়েছে। বিশেষ করে বাংলা সঙ্গীতের মৌলিক ধারাগুলো পৃথিবীর নানা প্রান্তে সমাদৃত হয়ে চর্চিত হচ্ছে। হাজার বছরের পুরোনো বাংলা সঙ্গীত আজ স্থানীয় চর্চার গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সোচ্চার হয়ে পথ চলছে।

বাংলা লোকসংস্কৃতির সবচেয়ে সমৃদ্ধ অংশ হিসেবে বাংলা সঙ্গীত পার করেছে হাজার বছর। বাংলা সঙ্গীত আবহমানকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সঙ্গীতের সুর ও তাল, বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োগ, সঙ্গীতের সার্বজনীনতা ও আধ্যাত্মবাদসহ আরো নানামুখী সঙ্গীতসংক্রান্ত বিষয় মানুষের কাছে প্রবল আকর্ষণীয় হয়েই বিচরণ করেছে।

প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় শাস্ত্র ও ধর্মীয় সঙ্গীতকে আশ্রয় করে বাংলা সঙ্গীত আজ প্রসারিত হচ্ছে আগামীর উঠানে। আমাদের জারি, সারি, বাউলগান, রবীন্দ্র বা নজরুলগীতির মতো সমৃদ্ধ সঙ্গীতের আকর বাংলা সঙ্গীতকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলেছে। আধুনিক গানের ব্যাপক চর্চা সেই সঙ্গীতের ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। বৈচিত্র্যময় সুরের ধারার সঙ্গীত এগিয়ে চলুক বিশ্বচরাচরে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি