২১ ডিসেম্বর : নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস
প্রকাশিত : ২৩:৫৮, ২০ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ০৮:৫২, ২১ ডিসেম্বর ২০২০
২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস। নাটোরের মানুষ উনিশ একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের স্বাদ পায় ১৬ ডিসেম্বরের চারদিন পর। একাত্তরে নাটোর ছিল পাকসেনাদের ২নং সামরিক হেডকোয়াটার। তৎকালীন সিও অফিসে(বর্তমানের ইউএনও অফিস) পাকসেনাদের সামরিক হেডকোয়াটার স্থাপন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস নাটোরে বড় ধরনের কোন লড়াই না হলেও একাধিকস্থানে গনহত্যা চালানো হয়। পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টির, শুকলপট্রি, মলিকহাটি, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, ধানাইদহ বাজার, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, সিংড়ার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরে গনহত্যা চালায়। ৩ জুন সদর উপজেলার ছাতনী গ্রামের গণহত্যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনা।
১৬ ডিসেম্বর দেশের অন্যান্য অঞ্চল মুক্ত হলেও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে পাকসেনারা নাটোরে এসে জড়ো হতে থাকে। শহরের পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশন ক্লাব, এনএস কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরের (উত্তরা গণভবন) ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়া পাকসেনারা মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করলেও নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরে আত্মসমর্পনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় ২০ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত।
ফলে ২১ ডিসেম্বর নাটোর পুরোপুরি শত্রমুক্ত হয়। আত্মসর্মপন অনুষ্ঠানে পাকসেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ মিত্রবাহিনীর ১৬৫ মাউনটেন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পন করেন।
এদিন পাকিস্তানি বাহিনীর ১৫১ অফিসার,১৯৮ জন জেসিও, ৫৫০০ সেনা, ১৮৫৬ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য এবং ৯ টি ট্যাংক, ২৫ টি কামান ও ১০ হাজার ৭৭৩ টি ছোট অস্ত্র সহ আত্মসমপর্ন করে।
আরকে//