বেঁচে থাকলে রাসেল হতেন উন্নয়নযাত্রার অগ্র সেনানী
প্রকাশিত : ১১:২২, ১৮ অক্টোবর ২০২১
বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। বিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামেই রাখা হয় নাম। বেঁচে থাকলে আজ পা রাখতেন ৫৮ বছরে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন শিশু রাসেল। রক্তাক্ত বাবা-মাকে দেখার পর আকুতি ছিলো হাসু আপার কাছে যাওয়ার। ঘাতকের বুলেট নিস্তব্ধ করে দেয় ১০ বছর বয়সী একটি মানবিক জীবনকে। দু’চোখের দ্যুতিতে ব্যক্তিত্ব আর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ছায়া ছিলো বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ রাসেলের।
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার কোল আলো করে এলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। বিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের অনুরাগী শেখ মুজিবের মুখে তার দর্শনশাস্ত্র শুনতে শুনতে বেগম মুজিব তার ছোট সন্তানের নাম রাখেন রাসেল। ছিলেন প্রিয় আসু আপাসহ ৫ ভাইবোনের মধ্যমণি।
রাসেল পড়তেন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলে। প্রটোকল ছাড়াই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতেন। সহপাঠীদের কাছে নেতৃত্বগুণে রাসেল ছিলেন সবার প্রিয়।
খুব অল্প সময় পিতার স্নেহ পেয়েছেন রাসেল। পরিবারের সঙ্গে কাটানো দুর্লভ মুহূর্তগুলোই শুধু ইতিহাস বয়ে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রীয় সফরগুলোতে পিতার একান্ত সান্নিধ্যে রাসেল দেখেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর পাহাড়সম ব্যক্তিত্ব।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, রাসেলের বয়স মাত্র ১০। বত্রিশ নম্বরের রক্তাক্ত সেই ভোরে তাঁর আকুতি ছিলো, মায়ের কাছে যাব। অথচ, বাবা-মাসহ প্রিয়জনের নিথর দেহগুলো দেখতে দেখতে নৃশংস ঘাতকের গুলিতে উড়ে গেলো রাসেলের মাথার খুলি।
শেখ হাসিনার সহপাঠি অধ্যাপক নাসরিন আহমাদ বলেন, তার বাবাকে দেখেছে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে। তারপরে মাকে দেখেছে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে। রাসেলকে দেখে তারা কেঁদে উঠেছে, রাসেল তাদের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তারপরে দুটো গুলি দিয়ে ওই তিনজনকেই তারা শেষ করেছে। যারা মানুষ নয়, তারাই ওই রকম কাণ্ড ঘটাতে পারে।
ছোট্ট রাসেলের অকৃত্রিম ব্যক্তিত্বে বঙ্গবন্ধুর ছাপ স্পষ্ট ছিলো বলেই ভয় ছিলো ঘাতকের।
অধ্যাপক নাসরিন আহমাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করতেন, রাজনীতিতে অনেক ক্যু হয় অনেক কিছু হয়। কিন্তু ওই ছোট্ট বাচ্চাটা কি করেছে? বাড়িতে নতুন বউ একজন ১৫ দিন আগে এসেছেন, আরেকজন হয়তো কিছুদিন আগে বা পড়ে এসেছেন, তারা কি দোষ ছিল? বঙ্গমাতার কি দোষ ছিল?
বেঁচে থাকলে হয়তো রাসেলই হতেন আজকের উন্নয়নযাত্রার অগ্র সেনানী।
এএইচ/