দু’বাংলার ভাষায় প্রাণ ফেরানো এখনও সম্ভব (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:০০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৩:০৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
দু’বাংলার কথাবার্তা বাচনভঙ্গি-খাদ্যাভ্যাস সবই এক। ভাষা চর্চায়ও আছে মিল। অমিল শুধু বাংলার আভিজাত্য রক্ষায়।
বাংলা ভাষার বয়স হাজার ছাড়িয়েছে। নানান বাঁক ঘুরে পরিবর্তন হয়েছে বাংলা ভাষার আভিজাত্য। প্রবহমান স্রোত গড়িয়ে কখনও তা ছাপিয়ে গেছে বঙ্গভঙ্গ কিংবা দেশভাগের মতো স্পর্শকাতর ব্যাপারকে।
উনিশ শতকের গোড়ায় যে সাধু ভাষা দেখা যায় তা কলকাতার ফসল। তারও আগে আঠার শতকে যে গদ্যের নমুনা তাতে আরবি ফারসির ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত। তখনকার বাক্যও ছিল ছোট ছোট- কিছুটা এখনকার মতোই।
১৭৮০ দশক থেকে ইংরেজদের তত্বাবধানে আইনের বই ও সরকারি নথিপত্রের অনুবাদ শুরু হলে কমে যায় আরবি ফারসি শব্দ। যুক্ত হয় বড় বড় বাক্য।
রাজা রামমোহন, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম চন্দ্র হয়ে আজকের পরিমিত বাংলা কতোটুকু চর্চা হচ্ছে এপার কিংবা ওপার বাংলায়?
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেখ মো. রকিজুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে এই বিতর্কটা উঠেছে যে ঢাকা থেকে গৃহীত ঢাকাই ভাষাকে নিয়ে কেন আমরা মান ভাষা তৈরি করলাম না। বাংলা ভাষার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাটা আরও জোড়ালোভাবে গৃহীত হতে পারতো। যেটা হয়নি প্রচুর পরিমাণে অনুবাদ। ইউরোপ, রাশিয়া এবং জাপানেও নিজেদের ভাষায় উচ্চশিক্ষা হচ্ছে। তাদের পরিভাষা চর্চাটা এত বড় আকারে গৃহীত হয়েছে যে তাদের কোন অসুবিধা হয় না। বাংলায় পরিভাষা চর্চাতে সমস্যা আছে। আমরা এখনও অনেক পরিভাষা তৈরি করতে পারেনি।”
পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট গবেষক ও সমালোচক অধ্যাপক ড. প্রথমা রায় মণ্ডল বলেন, “মধ্যযুগের সাহিত্য অনুবাদ হয়েছে। মানে আনুপাতিক হারে বাড়ছে না। ভাল-মন্দ দুই-ই আছে। এখনও বলা যাবে না, সময়ে বলবে সেটা।”
নানামুখি সমস্যার কারণে সাহিত্যের রূপ-রসের শহর হতে পারেনি কলকাতা। তাহলে ঢাকার অবস্থান কোথায়?
অধ্যাপক রজিকুল বলেন, “ইংরেজি ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষাকে মিলিয়ে যে একটা জগাখিচুড়ি তৈরি করা, এটা বেশি দিন যাবে না।”
অধ্যাপক প্রথমা রায় মণ্ডল বলেন, “জগাখিচুড়ি যেটা মনে হচ্ছে ভবিষ্যতে হয়তো সেটাই গ্রহণযোগ্য হয়ে যাবে। বাংলা শব্দভান্ডারে যত শব্দ আছে তার মধ্যে বিদেশি শব্দের সংখ্যা তো বিপুল।”
তবে সাহিত্যচর্চার অসুবিধা দূর করে দু’বাংলার ভাষা বাংলায় প্রাণ ফেরানো এখনো সম্ভব- অভিমত সাহিত্য সমালোচকদের।
অধ্যাপক রজিকুল বলেন, “এই বিষয়ে উৎকণ্ঠা নাই। বাংলা ভাষার মান ভাষা দাঁড়িয়ে গেছে।”
অধ্যাপক প্রথমা রায় মণ্ডল বলেন, “উঠতি প্রজন্মের মধ্যে শুরু হয়েছে বাংলা-ইংরেজি-হিন্দি মিশিয়ে কথা বলা।”
এএইচ/