১ মার্চ: আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে কূটকৌশল, বিক্ষুব্ধ বাংলা
প্রকাশিত : ০০:১১, ১ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ০০:১৬, ১ মার্চ ২০২২
একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চ; এ দেশের ইতিহাস বদলে দেয়ার সূচনার ক্ষণ। সত্তরের গণপরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর কূটচাল শুরু হয়।
১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ৩ মার্চ বসার ঘোষণা দেয়া হলেও মার্চের প্রথম দিনেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আচমকাই এক বেতার ভাষণে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন।
কারণ হিসেবে জানান, পিপলস পার্টিসহ কয়েকটি দল ৩ মার্চের অধিবেশনে যোগ দিতে না চাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত।
ইয়াহিয়ার এমন হঠকারি ঘোষণার পরপরই রাজধানী ঢাকায় শুরু হয় প্রচণ্ড বিক্ষোভ। ঢাকা স্টেডিয়ামে বিসিসিপি ও আন্তর্জাতিক একাদশের মধ্যে চলা ম্যাচও বন্ধ হয়ে যায়। স্টেডিয়াম ছেড়ে মানুষ নামে মিছিলে। সব মিছিলের গন্তব্য তখন হোটেল পূর্বাণী; উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা জানা।
জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত হওয়ার খবরে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা থেকে বিমান চলাচল। ঢাকা বিমানবন্দর এবং পিআইএর মতিঝিল অফিসের কর্মীরা অফিস ত্যাগ করেন।
ওইদিন পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠক শেষে হোটেল পূর্বাণীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানান। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকা এবং পরদিন সারা বাংলায় হরতাল, ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ঘোষণা দেন।
রেসকোর্সের জনসভায় বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে জানান।
১ মার্চ রাতে জেনারেল ইয়াহিয়া ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসনকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাহেবজাদা এম এয়াকুব খানকে প্রদেশের বেসামরিক শাসনকর্তা নিয়োগ করেন।
পরে ‘খ’ অঞ্চলের প্রশাসক নতুন আদেশে সংবাদপত্রে দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কোনো খবর বা ছবি প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন।
৩ মার্চের জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনুষ্ঠানের প্রতিবাদে ২ মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানে যে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল পিপলস পার্টি, ইয়াহিয়ার ঘোষণার প্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এসি