৫ মার্চ ১৯৭১: গুলি চলছেই, বাড়ছে লাশের মিছিল
প্রকাশিত : ০৮:৩৩, ৫ মার্চ ২০২২
মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের জনসংযোগ কর্মকর্তা (স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়) রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী তার ’৭১ এর দশমাস’ বইতে লিখেছেন, ১৯৭১ এর ৫ মার্চ টঙ্গীতে সেনাবাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত ও বহু শ্রমিক আহত হন।
ঢাকায় সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার সরকারি ঘোষণা আসে সন্ধ্যায়।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এদিন হরতালের পর ব্যাংক খোলা রাখা হয়। আর জুমার নামাজের পর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় মসজিদে মসজিদে করা দোয়া। রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সভা ও শোভাযাত্রার করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর ভাষ্যে, ওইদিন বিভিন্ন জেলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।
আন্দোলনে সাড়া দিয়ে বিকালে কবি-সাহিত্যিক ও শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে রাজপথে নামেন। শহীদ মিনারে আহমদ শরীফের নেতৃত্বে এক সভায় তারা স্বাধীনতার শপথ নেন। ঢাকায় ছাত্রলীগ বের করে লাঠি মিছিল।
বাংলাদেশে আন্দোলনে নিহতদের গায়েবানা জানাজা হয় লাহোরে।
বিক্খুব্ধ ওই সময়ে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পর পার্টির মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা মন্তব্য করেন, জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত রাখায় আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত অবাঞ্ছিত এবং আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়।
অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল আসগর খান বিকালে করাচি থেকে ঢাকায় পৌঁছান, পরে রাতে বঙ্গবন্ধুর সাথে ধানমণ্ডির বাসভবনে দেখা করেন।
তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমদ ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করতে ঢাকা বেতারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর সিলেটসহ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে সেনাবাহিনী গুলিয়ে চালিয়ে নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করছে।
এভাবে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করাকে তিনি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এসএ/