ঢাবিতে পতাকা উত্তোলন, স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ বপন
প্রকাশিত : ১০:৫৮, ২ মার্চ ২০২৪ | আপডেট: ১১:০১, ২ মার্চ ২০২৪
একাত্তরের মার্চ ইতিহাসের বাঁকবদলের লগ্ন। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের মানচিত্রশোভিত পতাকা। সবুজ জমিনে লাল বৃত্তের পতাকাটি স্বাধীনতা আন্দোলনে আনে নতুন মাত্রা।
একাত্তরের শুরুতেই বেগবান হয় পাকিস্তানিদের শোষণের বিরুদ্ধে মুক্তিকামী বাঙালির আন্দোলন।
সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর ভীত কেঁপে ওঠে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর। ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে ইয়াহিয়া।
প্রতিবাদে রাজপথে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ২ ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতাল। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বিক্ষোভ সমাবেশে উঠে আসে স্বাধীনতার ইশতেহারের প্রসঙ্গ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবীব বলেন, “পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে এসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। মানুষের মধ্যে এই যে জাতীয়তাবাদী বিক্রমটা কিভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে তা চোখে না দেখলে এটা বোঝানো যাবেনা। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বারান্দায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ উঠলেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানী পতাকা নামিয়ে ফেলা হলো। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একজন ছাত্র হিসেবে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে থাকতে পেরে ভালো লাগছে।”
বেলা ১১টার দিকে বক্তব্য দিচ্ছিলের ডাকসু ভিপি আ স ম আব্দুর রব। মিছিল নিয়ে আসা ছাত্রলীগ নেতা শেখ জাহিদ সবুজ জমিনের ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনালি মানচিত্র খচিত একটি পতাকা তুলে দেন আ স ম আব্দুর রবের হাতে।
নারী প্রগতি সংঘ নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, “তখন ডাকসুর নেতৃত্বাধীন আসম আব্দুর রব এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ঢাবির কলাভবনের বান্দায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। সেখানে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, এই সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”
সমাবেশ থেকে ছাত্ররা মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাসভবনে পৌঁছায়। সেখানেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা উড়ান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২ মার্চের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ বপন হয়।
লাল, সবুজ, সোনালি তিন রঙের পতাকা সেই যে বাংলার আকাশে উড়লো তা আর নামেনি। বাঙালির হৃদয় আকাশে লাল সবুজের চেতনা আজও মুক্তির কথা বলে, জানান দেয় স্বাধীনতা আর স্বাধীকারের ইতিহাস।
এএইচ