বইমেলায় একখণ্ড বঙ্গবন্ধু
প্রকাশিত : ১৩:৩৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৪:৪১, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
এসেছে প্রাণের বইমেলা। গত ১ ফ্রেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে বইমেলা বসলেও বইমেলার ব্যপ্তি ছড়িয়ে গেছে সোহরাওয়ার্দী মাঠ পর্যন্ত। তবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন তুলে ধরতে বসেছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুকর স্টল।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শিশু-কিশোরসহ দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর স্মৃতি জাদুঘরের আদলে এ স্টলকে সাজানো হয়েছে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বাংলা একাডেমি মূল চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর বাড়ি-৬৭৭, সড়ক-৩২, ধানমন্ডি, ডাকা-১২০৯ এই নামে স্টলটি দেখতে পাবেন।
বইমেলা পরিদর্শনে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুকর স্টলের সামনে ঝটলা দেখা গেছে। শিশু-কিশোরসহ, রাজনৈতিক সচেতন, শিক্ষানুরাগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই স্টলে ভিড় জমাচ্ছে। মেলায় ঘুরতে আসা ১০ বছর বয়সী তাবাসসুম মিম তার বাবার সঙ্গে মেলায় ঘুরতে এসেছেন। কিশোর উপন্যাস কেনার পরই বাবা আরিফ নিয়ে এসেছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুকর স্টলে। এই স্টলে কেন নিয়ে আসলেন, জানতে চাইলে আরিফ বলেন, যার মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেলাম, যার কারণে আজকে স্বাধীনভাবে মেলায় ঘুরতে আসতে পারলাম, যার কারণে আজকে আমার মেয়ে স্বাধীনভাবে স্কুলে যেতে পারছে, তাঁর সংগ্রামী জীবন মেয়েকে জানাতেই এই স্টলে নিয়ে এসেছিঠ।
তবে ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, জাতির জনককে জানার শেষ নেই। তাই এ বছর কারাগারের রোজনামচা বইটি সংগ্রহ করলাম। এদিকে বিসিএসসহ সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কীয় প্রশ্নগুলোর উপর গুরুত্ব দেওয়ায়, এই বইগুলো সংগ্রহ খুব কাজে আসবে বলেও মত দেন তিনি। এ ছাড়া এ বইগুলি পড়ার মাধ্যমে প্রকৃত ইতিহাসও জানতে পারা জায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই স্টল সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতরি জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আমরা এই স্টলকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়ির আদলে তৈরি করেছি, যেন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা এখানে এসে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে স্বরণ করতে পারে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর বই পড়ার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক দর্শন এবং সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে।
কোন কোন বই বেশি বিক্রি হচ্ছে, এমন প্রশ্নে এন আই খান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কর্তৃক রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারে রোজনামচা’ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত ‘শেখ মুজব আমার পিতা’ বই তিনটি বেশি বিক্রি হচ্ছে । এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা অন্যান্য বইয়ের প্রতিও চাহিদা রয়েছে পাঠক সমাজে।
মেলায় ঘুরতে আসা একজন দর্শনার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মিজান উদ্দিন বলেন, অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কেন্দ্র করে যে স্টল সাজানো হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি কিনেছি। আমি মনে করি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।
এই স্টলে যে বই পাওয়া যাচ্ছে-বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারে রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ, বঙ্গবন্ধু( জীবনী), ১৫ই অগষ্ট ১৯৭৫, আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম, বাঙালীর কলঙ্কমোচন, ইতিহাসের মহানায়ক, শেখ রাসেল , সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত শেখ মুজিব আমার পিতা, সাদা কালো, আমরা জনগণের কলা বলতে এসেছি, দারিদ্র দূরীকরণে: কিছু চিন্তা ভাবনা, সহে না মানবতার অবমাননা, বিপন্ন গণতন্ত্র, লাঞ্ছিত মানবতা, বাংলাদেশ স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, জাতিসংঘ মিলেনিয়াম সামিটে, ওরা টোকাই কেন, People and Democracy, সবুজ মাঠ পেরিয়ে, শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-১, শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-২ সহ আরোও অনেক গ্রন্থ এখানে পাবেন।
এছাড়াও পাবেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমি রচিত কিছু বই। এই বইগুলোর মধ্যে রয়েছে-জাতির জনক: তাঁর সারা জীবন, Father of the Nation: Life and Achievement, প্রিয় মানুষ শেখ মুজিব, Our Beloved Sheikh Mujib, মুক্তির সংগ্রামে শেখ মুজিব, ছবি ছড়ায় বঙ্গবন্ধু, কবিতায় বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু কোষগ্রন্থ, ছেলেবেলায় শেখ মুজিব, ৭ই মার্চ: বঙ্গবন্ধুর অসামান্য ভাষণ (সিডিসহ), বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও সংগ্রামসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই।
এমজে/