বই মেলায় শিশুদের আকর্ষণ ‘সিসিমপুর’
প্রকাশিত : ১৯:৩৩, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২২:৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
প্রতিবারের মতো এবারও বই মেলায় শিশুদের জন্য রয়েছে ‘সিসিমপুর শো’। মেলায় শিশু চত্তরে এসে শিশুরা হালুম, টুকটুকি, ইকরিসহ বিভিন্ন চরিত্রের পারফর্ম দেখতে পাচ্ছেন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট স্থানে অনেক শিশু একসঙ্গে খেলার সুযোগও পাচ্ছেন। মেলায় বাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় এ চত্তরটি তাই শিশু ও অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত। যেখানে তারা আগ্রহের সঙ্গে উপভোগ করছেন সিসিমপুর শো আর শিশুদের প্রাণবন্ত খেলা।
আজ শুক্রবার সরকারি ছুটি ও মাসব্যাপী বই মেলার নবম দিনে সরেজমিন দেখা যায়, একুশে গ্রন্থমেলার শিশু চত্তর প্রাঙ্গণে বিটিভির শিশুতোষ বিষয়ক জনপ্রিয় এ `সিসিমপুর` অনুষ্ঠান সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হয়। সিসিমপুর দেখার জন্য মা বাবার সঙ্গে শিশুরা মেলায় আসে। তবে সপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে সকাল ১১টায় মেলা প্রাঙ্গণ খোলা হলেও দুপুর ২টা পর্যন্ত তেমন একটা বই পিপাসু ক্রেতা বা দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ করা যায়নি। উপচে পড়া ভীড় ছিল শুধুমাত্র শিশু চত্তরে।
নদিয়া শারমিন নামের এক মা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে সকাল ১১টায় এসে গেটে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, আমার দুইটা বাচ্চা। নায়িম ও নয়ন। বড় বাচ্চাটা ক্লাস টুতে পড়ে। তাদের দুজনকেই এখানে নিয়ে এসেছি। কারণ ওরা দুই জনই সিসিমপুর ভক্ত। বাসায় সিসিমপুর দেখলেও তারা বই মেলায় এসে সরাসরি সিসিমপুর দেখবে। সে জন্য বায়না ধরেছে। অন্যথায় খাওয়া-দাওয়া কিছুই করবে না। নিরুপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়ে আসলাম।
সকাল সাড়ে ১১টায় বই মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে শিশু কর্নারের সিসিমপুরের মঞ্চে শিশুদের `সিসিমপুর লাইভ শো` শুরু হয়। চলছে গাড়ি সিসিমপুরে, চলছে গাড়ি সিসিমপুরে....এই গানের সঙ্গে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বাচ্চারা মঞ্চে নাচানাচি ও আনন্দ করতে থাকে।
এর কিছুক্ষণ পরই চলে আসে সিসিমপুর শোতে যারা পারফর্ম করে তারা। মঞ্চে এসে হাজির একের পর এক চরিত্র। এদের মধ্যে শিশুদের প্রিয় চরিত্র হালুম, ইকরি, টুকটুকিসহ অন্যরা। এ সময় তাদের চরিত্র অনুযায়ী গান বাজানো হয়। তখন দর্শনার্থী শিশুরা অনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে।
সিসিমপুর চত্তরে হৃদয় নামের এক কর্মকর্তা একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, আমরা মূলত বাচ্চাদেরকে বিনোদন দিতেই সিসিমপুরের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। কারণ বাচ্চাদের কাছে বিটিভির সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাই সেই সমস্ত চরিত্রদের বাচ্চাদের সামনে দেখালে তারা খুশি হয় এবং আনন্দ পায়।
সিসিমপুরের ম্যানেজার মো. খলিলুর রহমান বলেন, শিশুতোষ এই অনুষ্ঠান বই মেলা চলাকালীন শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ও বিকেল সাড়ে ৩টায় ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় হবে। একুশে ফেব্রুয়ারির দিনও এ শো চলবে।
তিনি বলেন, `আমরা বাচ্চাদের বিনোদনের পাশাপাশি স্টলের বইয়ের প্রতি আগ্রহী করছি। শিশুতোষ বই আমাদের গত বছর পর্যন্ত ৫৬টি ছিল, এ বছর আরো ৬টি বই নিয়ে আসা হয়েছে।
সিসিমপুর শো পারফর্ম করতে বিভিন্ন দায়িত্বে তাদের দলে মোট ১০ জন লোক কাজ করছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, মা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) তাদের সহযোগিতা করছে।
এদিকে, দুপুর ২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে বইপ্রেমীদের তেমন একটা ভিড় দেখা যায় নি। অনেকটা অবসরে সময় কাটাচ্ছেন স্টলগুলোর দোকানিরা। এ সময় বই বিক্রি তেমন একটা হয়না বললেই চলে।
মিজান পাবলিশার্স থেকে বিক্রেতা মোহাম্মদ আরিফ জানালেন, সকাল থেকে ক্রেতারা এখনো ওইভাবে আসেনি। বিকেলের দিকে মানুষ তাদের কর্মব্যস্ততা শেষে বই মেলায় আসবে এবং মেলা জমবে।
মাসব্যাপী এই বই মেলা ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
আরকে/এসি