বিজয় দিবসের যত আয়োজন
প্রকাশিত : ০৯:০২, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই দিনে মুক্তিকামী জনতার কাছে আত্মসমর্পণ করে হানাদার বাহিনী। দিনটিকে উদযাপন করতে হাতে নেওয়া হয়েছে নানা আয়োজন।
বিজয়ের এই দিনে প্রভাত শুরু হবে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে। এরপর ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হবে সম্মিলিত বাহিনীর কুচকাওয়াজ। এই অনুষ্ঠানের জন্য আশেপাশে এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সহায়তায় সুসজ্জিত জাহাজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, ঢাকা সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, চাঁদপুর ও বরিশালে বিআইডব্লিউটিসি’র ঘাটে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে।
এছাড়া দেশের সব সরকারি এবং বেসরকারি শিশু পার্ক সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা হবে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ সময় শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে।
পাশাপাশি বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
এছাড়া যেসব জাদুঘর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে তার মধ্যে আছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভো থিয়েটার, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, বিমান বাহিনী জাদুঘর, নৌ বাহিনী জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভূগর্ভস্থ জাদুঘর।
বিজয়ের উৎসবকে আরও বাড়িয়ে দিতে আয়োজন করা হয়েছে কনসার্ট। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহযোগিতায় ‘গৌরবময় বিজয়ের ৪৮ বছর’ শিরোনামে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মহান বিজয় দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের মাঠে দুপুর ২টা থেকে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষক ও বাংলাদেশ পুলিশের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইবেন মমতাজ বেগম, জেমস ও তার ব্যান্ড নগর বাউল এবং চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমিসহ অন্যান্য সংগীত শিল্পীরা। বিজয়ের গান পরিবেশন করবেন ফকির আলমগীর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন দেবাশীষ বিশ্বাস ও ইসরাত পায়েল।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ’ ৭১ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘শিখা চিরন্তন’ বেদি সংলগ্ন ‘স্বাধীনতা চত্বরে বিস্তারিত অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করেছে। এর আগে সকাল ৮টায় ফোরামের নেতারা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।
এছাড়া সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ১৭ ডিসেম্বর বিকাল তিনটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।