পাটের রঙ্গে সেজেছে ঢাকা
প্রকাশিত : ০০:০৫, ৮ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২৩:২১, ১১ মার্চ ২০১৮
জাতীয় পাট দিবস ৬ মার্চ ২০১৮। দেশে দ্বিতীয়বারের মতো এ দিবসটি পালনে ঢাকাকে সাজানো হয়েছে পাটের রঙ্গে। কোথাও আড়া করে রাখা হয়েছে পাটের আঁশ। আবার কোথাও পাট মাথায় নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কৃষক। কোথাও আবার পাটের শাড়ী পরা তরুণী। এছাড়া বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুনে আছে বহুমুখী পাট পণ্যের সমাহারসহ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। কোথাও লেখা আছে পাটের ঐতিহ্য গাঁথা কথামালা।
আজ বুধবার রাজধানীর ব্যস্তময় সড়কগুলোতে সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের ডিভাইডার ও ল্যাম্পপোস্টে বিজয় পাট দিবসের বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন উড়ানো হয়েছে। যেখানে পাটের ঐতিহ্য ধারণে তুলে ধরা হয়েছে এর ইতিহাস। রাজধানীর শাহবাগ থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে যেতে সবারই দৃষ্টি আকর্শন করছে এ ধরণের মনোমুগ্ধকর পাট পণ্যের ছবি।
রাজধানীর বেশ বয়েকটি ব্যস্ততম সড়কে এটা থাকলেও হাতিরঝিল, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, সংসদ ভবনের সামনে এ ধরনের বেনার ফেস্টুন পথযাত্রীদের দৃষ্টি অকর্শণ করছে সবচেয়ে বেশি। ফেস্টুনগুলোতে ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস, বাংলার পাট বিশ্বমাত, জাতীয় পাট দিবস ২০১৮ প্রভৃতি কথামালা লেখা আছে। যা দেখে পথচারীদের মনে প্রশ্ন জাগছে কেন এটা। শিক্ষিত নাগরিকরা সহজেই পড়ে বুঝতে পারছেন পাট দিবস উপলক্ষে এ আয়োজন।
আর যারা লেখা-পড়া জানে না, তাদের মনে তৈরি হচ্ছে হাজারো প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যানবাহনের মধ্যে চলছে সোনালী আঁশ পাট নিয়ে আলোচনা। যেখানে অংশ নিচ্ছেন পাট সম্পর্কে না জানা নগর জীবনের ছোট শিশুরাও। প্রশ্ন করে জানতে পারছেন এক সময়ে এদেশে পাট ছিল একমাত্র অর্থকরী ফসল। দেশী-বিদেশী নানামুখী চক্রান্তে সে ঐতিহ্য আমরা হারাতে বসেছিলাম। কিন্তু ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই আবার তার গৌরব ফিরতে শুরু করেছে।
সেখান থেকেই তারা জানতে পারছেন দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ/পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যেকে সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দেশে ‘জাতীয় পাট দিবস-২০১৪’ উদযাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পাট দিবসের গুরুত্ব ও পাট সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে এগুলো করা হয়েছে। দিবসটি ঘিরে স্কুলের শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার তুলে দেন।
এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত মেলায় ২৩৫ রকমের বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। এ প্রদর্শনী চলবে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত। ‘আগামী ৯ মার্চ রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দিবসের মূল অনুষ্ঠান ও ৯ থেকে ১১ মার্চ পাটপণ্যের মেলার আয়োজন করা হবে।
শাহবাগ থেকে আগারগাঁও পথে যেতে কারওয়ান বাজার মোড়ে ওয়েলকাম পরিবহনের শিপন নামের স্কুল পড়ুয়া এক যাত্রী বলেন, রাস্তার পাশে বেনার- ফেস্টুন এটা আবার কী? নৌকার উপরে দেখছি সুতা। তার উপর আবার বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। ওদিকে মোড়টা ঘিরে দেখছি মাথায় বোঝা কিছু মানুষ, আসলে কারা তারা? শিপনের সব প্রশ্নের জবাব দিলেন তার পাশে থাকা বাসের অন্য যাত্রী আরাফাত কবির। তিনি বলেন, এক সময় আমরা পাটে শ্রেষ্ট ছিলাম। পাটই ছিল আমাদের অর্থকরী ফসল। আজ তা হারাতে বসেছিল। সেইটাকে আবার জাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতীয় পাট দিবস পালন করা হচ্ছে। তাই নৌকার উপর পাট রাখা হয়েছে। সুতা নয়। তিনি আরো বলেন, আজ আমরা যে পোশাক শিল্প দেখছি, তার রফতানি আয় এক সময় ১ বিলিয়ন ছিল। এখন অনেক বেড়েছে।
আমাদের পাট বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট পাট। এটার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে পোশাক শিল্পের মতো আরো বেশি রফতানি আয় করতে পারবে দেশ।
আরকে/এসি