ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভাসানচরে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২১ | আপডেট: ১১:৪০, ৩১ জানুয়ারি ২০২১

ভাসানচরে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গাদের পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কাজে দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যার অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের বিভিন্ন ধরণের শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা ছাড়াও তাদের প্রত্যাবাসনে কাজ চলবে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। 

এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরে সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এরইমধ্যে চার দফায় ৬ হাজার ৬৯০ জনকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলমান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব রোহিঙ্গাদের আইনি সহায়তা দেওয়া ছাড়াও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী সেল। এছাড়াও নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অনেক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছে।

এদিকে, ভাসানচরে স্থানান্তরিত হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিক ও তাদের সন্তানদের ইংরেজি ও মিয়ানমারের ভাষা শিক্ষা দেওয়া ছাড়াও তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছে এসব মন্ত্রণালয় এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। কক্সবাজারেই ৪৯৫টি শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নাগরিক ও তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। একইসঙ্গে ভাসানচরে নেওয়া রোহিঙ্গাদেরও একইভাবে শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নৌবাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে ভাসানচরে অবকাঠামো নির্মাণ ও রোহিঙ্গাদের আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা। অন্য দায়িত্বগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। এরইমধ্যে তারা সেসব দায়িত্ব পালন শুরু করেছে।

একই বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ্‌ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ভাসানচরে নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন কাজে দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। আমাদের একাধিক টিম সেখানে ইতোমধ্যেই চলে গেছে। তাদের শিক্ষা দেওয়া ছাড়াও কীভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলা যায় সেটা তারা দেখবেন। খুব তাড়াতাড়ি এই কাজগুলো শুরু করা হবে। 

তিনি বলেন, তাদের দিয়ে গাছ লাগানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, হ্যান্ডিক্রাফট, গার্ডেনিং ও কিচেনিংসহ বিভিন্ন কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু করা হবে। আর যখন আরও বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে তখন পশুসম্পদ পালন, সেলাই কাজ, কৃষিসহ অন্যান্য বিষয়েও প্ল্যান করা হবে। যাতে তারা নিজেরা কাজ করে খেতে ও চলতে পারে। তাছাড়া দেশি-বিদেশি সাহায্য-সহযোগিতা তো থাকবেই।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ভাসানচরে নেওয়া রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য একাধিক উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। কারিগরি প্রশিক্ষণগুলোর মধ্যে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ওয়েল্ডিংসহ হাতের বিভিন্ন কাজ শিক্ষা দেওয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে সাত লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের সর্বমোট সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি